যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরেক দফা কমলো। এক দিনেই ২০ পয়সা দর হারাল টাকা। মঙ্গলবার আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে এক ডলারের জন্য ৮৬ টাকা খরচ করতে হয়েছিল; বুধবার লেগেছে ৮৬ টাকা ২০ পয়সা।
ব্যাংকগুলো ডলার বিক্রি করছে এর চেয়ে প্রায় পাঁচ টাকা বেশি দরে। রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ও জনতা ব্যাংক বুধবার ৯১ টাকা দরে ডলার বিক্রি করেছে। অগ্রণী ব্যাংক বিক্রি করেছে ৯০ টাকা ৯০ পয়সায়। ব্যাংকের বাইরে কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে প্রতি ডলার ৯২ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।
দেড় মাস ৮৫ টাকা ৮০ পয়সায় ‘স্থির’ থাকার পর গত ৯ জানুয়ারি টাকার বিপরীতে ডলারের দর ২০ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকায় ওঠে। এরপর আড়াই মাস সেই দরে ‘স্থির’ থেকে বুধবার ২০ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় উঠেছে।
মহামারির মধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় ‘স্থির’ ছিল ডলারের দর। গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে।
বাড়তে বাড়তে ৮৫ টাকা ৮০ পয়সায় ওঠার পর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ওই একই দর ছিল। এরপর থেকে তা আবার বাড়তে শুরু করে।
আমদানি বাড়ায় ডলারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় শক্তিশালী হচ্ছে ডলার; বিপরীতে দুর্বল হচ্ছে টাকা। তবে পর্যাপ্ত রিজার্ভ থাকায় এতে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই বলে মনে করছেন অর্থনীতির গবেষকরা।
মাঝে এক বছর ছাড়া প্রতি বছরই বাংলাদেশি টাকার মান কমেছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করে থাকে ডলারে। অনেকটা ‘রক্ষণশীল নীতি’অবলম্বন করলেও আওয়ামী লীগ সরকারের ১৩ বছরে সেই ডলারের তুলনায় টাকার মান কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ ১৩ বছর আগে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে যে পণ্য বা সেবা কিনতে ১০০ টাকা লাগত, বর্তমানে তা কিনতে ১২৫ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এটি সরকারি হিসাবের তথ্য। বেসরকারি হিসাবে এই সময়ে টাকার মূল্যমান আরও বেশি কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বুধবার পর্যন্ত মুদ্রা বিনিময় হারের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে এ তথ্য মিলেছে। তথ্যে দেখা যায়, ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতি ডলারের বিনিময়ে পাওয়া যেত ৬৯ টাকা।
পিআরআই নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ডলারের অস্থিরতা কোথায় গিয়ে শেষ হবে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করেও বাজার স্বাভাবিক রাখতে পারছে না। কেননা, সরবরাহ এবং চাহিদার মধ্যে ব্যাপক তফাত।