ঢাকা: যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে অভিনেত্রী শাহ হুমায়রা হোসেন সুবহার করা মামলায় গায়ক ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক জুলফিকার হায়াত এ আদেশ দেন।
এদিন ইলিয়াসের পক্ষে জামিন শুনানির জন্য ধার্য ছিল। তবে, ইলিয়াস অসুস্থ জানিয়ে জামিন শুনানি পেছানোর আবেদন করেন তার আইনজীবী।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এর বিরোধিতা করে বলেন, আদালতে না এলেও আসামি ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রার্থনা করছি। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ইলিয়াসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী ইশতিয়াক আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন পান ইলিয়াস। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। আদালত বাদীর উপস্থিতিতে জামিন শুনানির জন্য ২ মার্চ দিন ধার্য করেন। তবে ওই দিন ইলিয়াস আদালতে না এসে সময় আবেদন করেন। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে ২২ মার্চ জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন।
গত ৩ জানুয়ারি রাজধানীর বনানী থানায় এই মামলা দায়ের করেন সুবহা।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত বছর সেপ্টেম্বরে ইলিয়াসের সঙ্গে সুবহার পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে। গত ১ ডিসেম্বর তারা বিয়ে করেন। বিয়ের সময় সুবহার পরিবারের পক্ষ থেকে ইলিয়াসের চাহিদা মোতাবেক ১২ লাখ টাকার রোলেক্স ব্র্যান্ডের ঘড়িসহ ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার পণ্য দেওয়া হয়। কিন্তু এতেও ইলিয়াস সন্তুষ্ট হননি। এর মধ্যে সুবহা জানতে পারেন, ইলিয়াস আগে একাধিক বিয়ে করেছেন এবং অসংখ্য প্রেমের সম্পর্ক চলমান। এরমধ্যে সুবহার কাছে ফ্ল্যাট কেনা বাবদ ৫০ লাখ এবং গাড়ির জন্য আরও ৩০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন ইলিয়াস।
গত ৯ ডিসেম্বর ইউটিউব চ্যানেল কেনার জন্য সুবহার মায়ের কাছে আরও ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন ইলিয়াস। তাকে আড়াই লাখ টাকা দেয় সুবহার পরিবার।
পরে গত ২৭ ডিসেম্বর দুপুরে ফ্ল্যাট ও গাড়ি কেনার জন্য ৮০ লাখ টাকার জন্য চাপ দেন ইলিয়াস। এ নিয়ে তাদের ঝগড়া হয়। এর জের ধরে রাত ৮টার দিকে সুবহাকে শারীরিক নির্যাতন করেন তিনি। পরদিন আবারও ৮০ লাখ টাকা যৌতুক চান তিনি। এ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সুবহাকে মারধর এবং মাথা দেয়ালের সঙ্গে ঠুকে জখম করেন ইলিয়াস।
এরপর ইলিয়াস সুবহাকে ব্যথার ওষুধের কথা বলে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান। একটু পর সুবহা অজ্ঞান হয়ে যান। এ সুযোগে ইলিয়াস আলমারিতে থাকা ২০ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার এবং ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যান। সুবহার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।