গোলাপগঞ্জ (সিলেট): হিজাব পরিধান করায় এক ছাত্রীকে ক্লাসরুমে লাঞ্চিত করার পাশাপাশি প্রকাশ্যে অকথ্য ভাষায় বকাবকি করার অভিযোগ উঠেছে সিলেটের গোলাপগঞ্জের ভাদেশ্বর নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে তিন দফা দাবি নিয়ে ফুঁসে উঠেছে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
রোববার সকালে অভিযুক্ত শিক্ষক সুনীল চন্দ্র দাসকে স্থায়ীভাবে অপসারণসহ স্কুলড্রেস ও বোরখা-হিজাব পরে পাঠদানে বাধা প্রদান না করার দাবি নিয়ে আন্দোলনে রাস্তায় নামে তারা।
এর আগে গত মঙ্গলবার পাঠদানে সময় এসএসসি পরিক্ষার্থী ওই ছাত্রীর সাথে এ আচরণ করেন সুনীল চন্দ্র দাস। তারই প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ।
শুরুতে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ বিক্ষোভ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় ব্যর্থ হলেও পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের মাধ্যমে ও ভাদেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক নেতা ও সুশীল সমাজ তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেয়ায় প্রতিবাদকারীরা সাময়িকভাবে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনসহ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নেতারা ও স্থানীয়দের উদ্যোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানা যায়। উক্ত বিষয় নিয়ে বিদ্যালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দশম শ্রেণির ক্লাস শুরু হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুনীল চন্দ্র দাস ক্লাসে এসে বিজ্ঞান সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন করেন। প্রশ্নের উত্তর দেন হিজাব পরিহিতা এক ছাত্রী। এ সময় অধ্যক্ষ তাকে হিজাব খুলে কথা বলতে বলেন। কিন্তু ওই ছাত্রী হিজাব খুলতে অপরাগতা প্রকাশ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুনীল চন্দ্র দাস। এ সময় তিনি হিজাবের ভেতরে খারাপ মানুষ থাকে, হিজাব পরলে ভূতের মতো মনে হয় ইত্যাদি কথা বলেন। পাশাপাশি অকথ্য ভাষায় গালাগাল করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
ফেইসবুকের লাইভে এই ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীর এক সহপাঠী। ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষর্থীর বক্তব্য না পাওয়া গেলেও তার সহপাঠীরা এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় অধ্যক্ষের বিচার দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সুনীল চন্দ্র দাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অভিজিৎ কুমার পালের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তাহার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।