এতদিন অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ চলছিল। এবার যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ল যুদ্ধ।
ইউক্রেন হামলার জন্য তাদের ওপর যে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিয়েছে বাকি বিশ্ব, তার কড়া সমালোচনা করে সেটিকে ‘আর্থিক সন্ত্রাস’ বলে উল্লেখ করল রাশিয়া। এবং জানালো তারা এবার এসবের মোকাবিলা করবে।
পশ্চিমি বিশ্বের আচরণকে রাশিয়া মোটেই ভালো চোখে দেখেনি। উল্টে পশ্চিমা বিশ্বকে তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তারা বলেছে, আমেরিকা-ইউরোপ নিয়েই বিশ্ব নয়। তাদের একঘরে করলে তারা যোগ্য জবাব দিতে তৈরি। কিন্তু কীভাবে এই জবাব দেবে রাশিয়া?
বৈদেশিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞেরা বিষয়টি বিশ্লেষণ করে জানাচ্ছেন- বাকি বিশ্ব নানা বিষয়ে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। যেমন, ন্যাচারাল গ্যাস। রাশিয়া বিশ্বকে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সরবরাহ করে। চট করে বিশ্ব তার বিকল্প পাবে না। গোটা বিশ্বের ১৫-১৭ শতাংশ অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করে রাশিয়া। এটারও দ্রুত কোনো সুরাহা পশ্চিমা বিশ্বগুলো বের করতে পারবে না। সবচেয়ে বড় কথা, গোটা বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ গম উৎপাদন করে রাশিয়া। ফলে, তারা যদি তাদের এই সম্পদগুলোর রপ্তানি বন্ধ করে, তবে ইউরোপ-আমেরিকাসহ গোটা বিশ্বই সঙ্কটে পড়বে। আর সেটা রাশিয়া ভালোই জানে। আর জানে বলেই তারা বিশ্বের আর্থিক নিষেধাজ্ঞায় ভয় পায়নি বরং কড়া ভাষায় তার সমালোচনা করেছে।
করোনা মহামারির কারণে ইউরোপসহ গোটা বিশ্বই অর্থনৈতিক ভাবে ধুঁকছে। এবার রাশিয়ার দিক থেকে যদি বড় ধরনের কোনো অর্থনৈতিক ধাক্কা আসে, তবে সেটা গোটা বিশ্বের পক্ষেই ভয়ঙ্কর হবে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক আগ্রাসন শুরু করে রুশ সেনারা। রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে শনিবার (৫ মার্চ) দশম দিনের মতো যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের সেনারা।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, যুদ্ধের দশম দিনে এরই মধ্যে ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়ে গেছে প্রায় ১২ লাখ মানুষ।