ঢাকা: বৃষ্টির কারণে প্রায় আধঘণ্টা বন্ধ থাকার পর দক্ষিণ আফ্রিকা-পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচটি ফের শুরু হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কিছু সময়ের জন্য খেলা বন্ধ থাকলেও পকিস্তানের ইনিংসের কোনো ওভার কর্তন করেন নি ম্যাচ রেফারি।
এর আগে খেলার ৩৭ ওভারের মাথায় পুরো অকল্যান্ডজুড়ে বৃষ্টি নেমে আসে। এ সময় ক্রিজসহ পুরো মাঠ কাভারে ঢেকে দেন গ্রাউন্ডসম্যানরা।
শনিবার (৭ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে শুরু হওয়া এ ম্যাচে টস পরীক্ষায় হেরে যান পাকিস্তানি অধিনায়ক মিসবাহ উল হক। টসজয়ী প্রোটিয়া দলপতি এবি ডি ভিলিয়ার্স তাদের ব্যাটিংয়ে পাঠান।
পাকিস্তানের হয়ে প্রথমে ব্যাট করতে নামেন আহমেদ শেহজাদ ও সরফরাজ আহমেদ। এ দু’জনের জুটি তুলে নেয় ৩০ রান। কাইল অ্যাবোটের বলে ডেল স্টেইনের বলে দুর্দান্ত ক্যাচে শেহজাদ (১৮) সাজঘরে ফিরলে ক্রিজে আসেন ইউনিস। এ দু’জনের জুটি তুলে নেয় ৬২ রান। তবে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এ জুটি ভাঙেন ডেভিড মিলার। তার দুর্দান্ত থ্রোতে রান আউট হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন অর্ধশতক বঞ্চিত সরফরাজ (৪৯)।
এরপর ব্যাট করতে নামা দলপতি মিসবাহ উল হককে নিয়ে ইউনিস খান পার্টনারশিপ গড়ে তুলে রান বাড়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রোটিয়া অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্সের বলে রুশোর হাতে ক্যাচ দিয়ে ইউনিসও (৩৭) ফিরে গেলে ৪০ রানে ভেঙে যায় সে জুটি। এরপর শোয়েব মাকসুদ ক্রিজে এসে মিসবাহ উল হকের সঙ্গে জুটি বাঁধার চেষ্টা করলেও আগের ম্যাচগুলোর মতোই এবারও ব্যর্থ হন তিনি। অ্যাবোটের বলেই রুশোকে অনেকটা ক্যাচ প্র্যাকটিস করিয়ে সাজঘরে ফেরেন মাকসুদ (৮)।
মাকসুদের বিদায়ের পর নামেন পাকিস্তানি ব্যাটিংয়ের অন্যতম ভরসা উমর আকমল। কিন্তু সমর্থকদের হতাশ করে সাজঘরের পথ ধরেন তিনিও। মরনে মরকেলের বলে এবি ডি ভিলিয়ার্সের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ১৩ রান সংগ্রহ করেন উমর।
ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখার চেষ্টা করছে প্রোটিয়ারা। এখন পর্যন্ত ৩৭ ওভারে ১৭৫ রান দিয়েছে তারা। পাকিস্তানের হয়ে ক্রিজে আছেন অধিনায়ক মিসবাহ উল হক (৪০) ও সদ্য নামা শহীদ আফ্রিদি।
এই ম্যাচ পাকিস্তানের জন্য অনেক দিক থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এবারের বিশ্বকাপে বড় দলের বিপক্ষে জয় নেই ৯২’র চ্যাম্পিয়নদের। তাই দলটির আত্মবিশ্বাসও তলানীতে। জিম্বাবুয়ে ও আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রত্যাশিত জয়ে শেষ আটে ওঠার লড়াইয়ে টিকে রয়েছে মিসবাহ-উল-হকের দল। এই ম্যাচে হারলে তাদের বিদায়ের অংক কষতে হবে।
অন্যদিকে দুর্দান্ত ফর্ম আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে প্রোটিয়াদের। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং এ তিন ক্ষেত্রেই পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপ ইতিহাসও প্রোটিয়াদের পক্ষে। টানা তিন বিশ্বকাপে (১৯৯২-৯৯) পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। একবারও হারেনি বড় আসরের ‘চোকার’রা।
দক্ষিণ আফ্রিকা দলে একটি পরিবর্তন হলেও দু’টি পরিবর্তন এসেছে পাকিস্তান একাদশে। প্রোটিয়াদের হয়ে ফারহান বাহারদিয়েনের পরিবর্তে নেমেছেন ইনজুরি ফেরত জেপি ডুমিনি। আর পাকদের পক্ষে হারিস সোহেল ও নাসির জামশেদের পরিবর্তে নেমেছেন যথাক্রমে ইউনিস খান ও সরফরাজ আহমেদ।
পাকিস্তান একাদশ
আহমেদ শেহজাদ, সরফরাজ আহমেদ, ইউনিস খান, মিসবাহ-উল-হক (অধিনায়ক), উমর আকমল (উইকেটরক্ষক), শহীদ আফ্রিদি, শোয়েব মাকসুদ, ওয়াহাব রিয়াজ, সোহেল খান, রাহাত আলি ও মোহাম্মদ ইরফান।
দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ
হাশিম আমলা, কুইন্টন ডি কক (উইকেটরক্ষক), ফাফ ডু প্লেসিস, এবি ডি ভিলিয়ার্স (অধিনায়ক), ডেভিড মিলার, জেপি ডুমিনি, রিলি রুশো, কাইল অ্যাবোট, ডেল স্টেইন, মরনে মরকেল ও ইমরান তাহির।