গাজীপুর: বালুনদী,চিলাই ও কাটারি খালের ত্রিমোহনায় বর্তমান মহানগরের ৪১নং ওয়ার্ডে এর অবস্থান।কাটারিখাল স্থানীয় নাম হলেও মূলত এটি চিলাই নদীর শাখা। প্রাচীন কাল থেকে নদী পথে মানুষের যাতায়াত ও পন্যপরিবহন সহজতর ছিল। তাই সভ্যতা ও জনপদগুলো নদীবন্দর কেন্দ্রিক গড়ে উঠত। সেই প্রাচীনকাল থেকে তাই গাজীপুরের কহর দরিয়ার পাশে টঙ্গী বাজার শীতলক্ষার পাশে শ্রীপুরের বরমী বাজার আর পূবাইল বাজার গড়ে উঠে।
একসময় কৃষি পণ্যসামগ্রী নিয়ে বড় বড় জাহাজ এসে ভিড়ত এই পূবাইল বন্দরে। প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার আশপাশের এলাকা ও জেলাগুলো থেকে সারি সারি নৌকা ভর্তি কৃষিপণ্য নিয়ে গায়ের লোকজন পূবাই বাজারে চলে আসতো। বিশেষ করে নদী ও বর্ষাবিলে সারি সারি পালতোলা নৌকার বহর দেখতে অত্যান্ত মনমুগ্ধকর ছিল। ছোট বেলায় সেই আশির দশকে নানা,মামাদের সাথে অনেক গিয়েছিলাম এই বাজারে। তখন নদীতে আসলেই দেখতাম শুশুকের ডিগবাজি। যাত্রা পথে পিপাসা লাগলে নদী ও বিল থেকে বাটি দিয়ে পানি উঠিয়ে পান করতাম। এখন দখল ও দূষণে গাজীপুরের খাল- বিল,নদী- নালা সব নষ্ট হয়ে গেছে। পানি পান করাতো দূরের কথা গায়ে লাগলেও ফোসকা উঠে যায়। সন্ধ্যার আগে আগে পূবাইল বাজার থেকে গুড়ের জিলাপি,নিমকি আর খাস্তারুটি নিয়ে পানকৌড়ি আর জলজ প্রাণীদের জলকেলি দেখতে দেখতে বাড়ি ফিরতাম। সেসব এখন কেবলই স্মৃতি। তাই সেই অতীতকে খুজতে হয়তো ছুটে এসে নিজেকে দাঁড়করাই ইতিহাসের কাঠগড়ায়।
সভ্যতার বিবর্তনে হারিয়ে গেছে অনেক জনপদ। নতুন কিছু এসে দখল করেছে পুরাতনের জায়গা। কি হারালাম আর কি পেলাম সেই লাভ ক্ষতির হিসেব মেলানো দায়।