ইউক্রেন যুদ্ধ পরিকল্পনা অনুসারে এগোচ্ছে বলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করলেও ইতিমধ্যে তার এক শীর্ষ জেনারেল নিহত হয়েছেন। এ ঘটনাকে রুশ আগ্রাসনের জন্য বড় আঘাত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার এক শীর্ষ জেনারেল নিহত
নিহত মেজর জেনারেল অ্যান্ড্রেই সুখোভাস্তি ছিলেন ৪১তম কম্বাইনড আর্মস আর্মি অব রাশিয়ার উপ-কমান্ডার। বুধবার রুশ সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের প্রতিরোধের মুখে পড়লে তিনি নিহত হন।-খবর মেইল অনলাইনের
তার মৃত্যুর কথা এখন পর্যন্ত রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। কিন্তু তার সহকর্মী সের্গেই চিপিলিভ সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে এ খবর দিয়েছেন।
এছাড়া রাশিয়া ও ইউক্রেনের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও খবরটি প্রকাশিত হয়েছে। এক স্নাইপারের গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন। শনিবার রাশিয়ায় তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে ক্রেমলিন জানিয়েছে, ইউক্রেন অভিযানে ৪৯৮ রুশ সেনা নিহত হয়েছেন। এছাড়াও এক হাজার ৬০০ সেনা আহত হয়েছেন। তবে রুশ বাহিনীর সত্যিকারের হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী বলছে, এই যুদ্ধে রুশ সশস্ত্র বাহিনীর ৯ হাজার হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু লড়াইয়ের তীব্রতার জন্য সত্যিকার হতাহতের সংখ্যা নির্ধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে।
২০২১ সালের অক্টোবরে ৪১তম ডিভিশনের উপ-কমান্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল অ্যান্ড্রেই সুখোভাস্তিকে। এর আগে বছরতিনেক নভোরসিয়াস্কে তিনি সপ্তম এয়ারবোর্ন অ্যাসল্ট ডিভিশনের কমান্ডার ছিলেন।
তিনি মস্কোর রেড স্কোয়ারের বিজয় কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছিলেন দুবার। তাকে অর্ডার্স অব কারেজ, দ্য অর্ডার অব মিলিটারি মেরিট ও মেডেল অব কারেজ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
ক্রিমিয়া দখলের অভিযানে অংশ নেওয়ায় তাকে বিশেষভাবে প্রশংসিত করা হয়েছিল।
এদিকে যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় দফার আলোচনা শেষ হলেও তাতে কোনো সফলতা আসেনি। তবে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে একটি মানবিক করিডল স্থাপনের ব্যাপারে দুপক্ষ একমত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) ইউক্রেনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিখাইলো পডোলোক এক টুইটবার্তায় বলেন, দ্বিতীয় দফার আলোচনা শেষ হয়েছে। কিন্তু ইউক্রেনের জন্য যে ধরনের সফলতা দরকার ছিল; তা আসেনি। কেবল মানবিক সংস্থাগুলোর জন্য একটি সফলতা আছে।
তিনি বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের শান্তিপূর্ণভাবে সরিয়ে নিতে আমরা যৌথভাবে একটি নিরাপদ মানবিক করিডর স্থাপনে একমত হয়েছি। যাতে তীব্র লড়াই চলা অঞ্চলগুলোতে তাদের খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ সহজ হয়।
ইউক্রেনের এই কর্মকর্তা বলেন, কোনো কোনো স্থানে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার স্বার্থে অস্থায়ী অস্ত্রবিরত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে ভবিষ্যতে দুপক্ষ আলোচনা চালিয়ে যেতে একমত হয়েছেন। এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি আলাপ করতে চেয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, আমরা রাশিয়ায় হামলা চালাচ্ছি না, তেমন কোনো পরিকল্পনাও নেই। আপনারা আমাদের কাছে কী চাচ্ছেন?
পুতিনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে বসুন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের মতো ত্রিশ মিটার দূরে না।