দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (২ মার্চ) রায় দেন যে, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সম্পাদকের পদে থাকছেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান।
রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন জায়েদ ও নিপুণ। এ রায়ের ফলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ বিজয়ী জায়েদ খানই বহাল থাকবেন। আদালতের রায়ে জয়ী হয়েই সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনকে ফোন করেন জায়েদ খান। আজ বিকেলেই সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসবেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমকে জায়েদ খান বলেন, ‘বাংলাদেশে আইনের শাসন আছে। হাইকোর্টের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা। আদালতের রায় পেয়েই আমি কাঞ্চন ভাইকে কল করেছি। এখন আর সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসতে কোনো বাধা নেই। আজ বিকেলেই বসব।’
গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। নিপুণ আক্তার পান ১৬৩ ভোট। এরপর টাকা দিয়ে ভোট কেনাসহ একাধিক অভিযোগ আনেন নিপুণ। পরে জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে শিল্পী সমিতির আপিল বোর্ডে আবেদন করেন নিপুণ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে করণীয় জানতে আবেদন করেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান।
এরপর জায়েদ খান ও চুন্নুর বিষয়ে বৈঠকে বসে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনী আপিল বোর্ড। বৈঠকে শেষে জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে সাধারণ সম্পাদক পদে নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করেন বোর্ডের প্রধান ও চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান। এর পরদিন ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ পরিষদের বিজয়ীরা শপথ নেন।
নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা এবং নিজের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনী আপিল বোর্ডের জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। সেই সঙ্গে জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে বিজয়ী ঘোষণার বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করা হয়। এ ছাড়া নিপুণের অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচনী আপিল বোর্ডকে সিদ্ধান্ত নিতে সমাজসেবা অধিদফতরের চিঠির কার্যকারিতাও স্থগিত করা হয়।
হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন নিপুণ। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। সে পর্যন্ত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে দুজনের কেউই দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না মর্মে (স্ট্যাটাসকো) আদেশ দেওয়া হয়।
এরপর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে হাইকোর্টকেই তাদের জারি করা রুলটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে হাইকোর্টে রুল নিষ্পত্তির আগপর্যন্ত চেম্বার আদালতের দেওয়া আদেশই বহাল থাকবে বলে নির্দেশ দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।