ঢাকা: সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ১৪৮টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা নির্বাচনী যেকোনো অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবেন।
সংশ্লিষ্ট জেলার সিনিয়র সহকারী জজকে নিয়ে ‘নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল’, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে ‘নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনাল’ গঠন করা হয়েছে।
ইসির আইন শাখার উপ-সচিব আফরোজা শিউলীর বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
ইসির যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, ১৪৮ ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৫ হাজার ৮৭৪ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭৬ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১ হাজার ২৩৬ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৪ হাজার ৬২ জন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন।
নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন মোট ৭১ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদের রয়েছেন ১১ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদের ১৩ জন ও সাধারণ সদস্য পদের ৪৭ জন। এসব প্রার্থী বা তাদের পক্ষে যেকোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন।
আইন অনুযায়ী, নির্বাচনী ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে হয়। ট্রাইব্যুনাল তা ১৮০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করে। ট্রাইব্যুনালের রায়ে কেউ সন্তুষ্ট না হলে সেই রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে আবার আপিল ট্রাইব্যুনালে যাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে আপিল ট্রাইব্যুনালও আবেদনের ১৮০ দিনের মধ্যে রায় দেবেন। তবে এখনও নির্বাচনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ হয়নি।
ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী, অনিয়মের জন্য ‘নির্বাচিত প্রার্থীর নির্বাচন বাতিল ও সামগ্রিক নির্বাচন বাতিলের আবেদন করা যাবে। ’ এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অপরাধ সংঘঠিত হওয়ার স্থান, সময় ও তারিখ স্পষ্ট করে উল্লেখ করতে হবে। উভয় পক্ষের শুনানির পর ট্রাইব্যুনাল বা আপিল ট্রাইব্যুনাল যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটাই চূড়ান্ত হবে।
নির্বাচিত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র অবৈধ হলে, নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য হলে, দুর্নীতি-অনিয়মের মাধ্যমে ভোটের ফল অর্জন বা ফল অর্জনের জন্য কার্যকলাপ বা আচরণ করা হলে, নির্বাচিত প্রার্থী তার এজেন্ট বা অন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যোগসাজশ করে কোনো দুর্নীতিমূলক কার্যকলাপ বা বেআইনি আচরণ করলে এবং নির্বাচনী ব্যয়সীমা লঙ্ঘন করলে ট্রাইব্যুনাল নির্বাচিত প্রার্থীর নির্বাচন বাতিল করতে পারবেন।
আবেদনকারী শুনানিতে হাজিরা দিতে না এলে বা অনুপস্থিত থাকলে বা মৃত্যুবরণ করলে আবেদন বা আপিল বাতিল হয়ে যাবে।
আবেদনকারী শুনানির যেকোনো সময় আবেদন বা আপিল প্রত্যাহার করতে পারবেন। এছাড়া ট্রাইব্যুনাল বা আপিল ট্রাইব্যুনালের খরচ আবেদনকারীকেই বহন করতে হবে।
গত বছরের ২১ জুন থেকে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট ধাপে ৪ হাজার ৫৮টি ইউপির নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচন কমিশন।