তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আশপাশ এলাকার আবাসিক হোটেল ও মেসে শনিবার রাত থেকে তল্লাশি করা হবে। দুষ্কৃতকারীরা যেন নাশকতামূলক কোনো কাজ করতে পারে, সে জন্য এ তল্লাশি চালানো হবে।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সব কথা জানান ডিএমপি কমিশনার।
তিনি আরও জানান, ছয় স্তরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ, বোম ডিজপোজাল ইউনিট, ডিবি, র্যাব ও সোয়াতের টিম থাকবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসে সঙ্গে ব্যাগ আনা যাবে না। নিরাপত্তার স্বার্থে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে। এ ছাড়া শহীদ মিনারে ব্যক্তিগত পর্যায়ে দুজন এবং সাংগঠনিকভাবে পাঁচজন শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসতে পারবেন।
এদিকে বরাবরের মতো এবারও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যাতে সবাই সুন্দরভাবে আসতে পারে, সে জন্য রুটম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। একুশের প্রথম প্রহর থেকে এ রুটম্যাপ মেনেই সবাইকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যেতে হবে বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে জানানো হয়।
ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২২ উদযাপনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন, রাজনৈতিক দল, সংগঠন, গণমাধ্যমকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থা ও সর্বসাধারণের সহযোগিতা কামনা করেন।
উপাচার্য বলেন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পলাশী মোড় থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত রাস্তায় তিন ফুট পরপর চিহ্ন থাকবে। এই চিহ্ন অনুসরণ করে সবাই পর্যায়ক্রমে শহীদ মিনারে যাবেন এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এ ক্ষেত্রে যথাযথভাবে রুটম্যাপ অনুসরণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন প্রবেশপথে স্বেচ্ছাসেবকরা হ্যান্ডমাইক দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে প্রচারণা চালাবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টিও তারা মনিটর করবেন। এ ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করি।
ঢাবির জনসংযোগ দফতর থেকে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজিমপুর কবরস্থান ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যাতায়াতের জন্য জনসাধারণকে পুরোনো হাইকোর্টের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্বর, বাংলা একাডেমি, টিএসসি মোড়, উপাচার্য ভবনের পাশ দিয়ে নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ি মোড়, নিউমার্কেট ক্রসিং পার হয়ে আজিমপুর কবরস্থানের উত্তর দিকের গেট দিয়ে কবরস্থানে প্রবেশ করতে হবে।
আর আজিমপুর কবরস্থানের মূল ফটক (দক্ষিণ দিকের) দিয়ে বের হয়ে আজিমপুর সড়ক হয়ে পলাশী মোড় ও ফুলার রোড মোড় হয়ে অর্থাৎ সলিমুল্লাহ হল ও জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে শহীদ মিনারে যেতে হবে।
তবে কবরস্থানে না গিয়ে বিকল্প পথে যারা শহীদ মিনারে যেতে চান, তারা উপাচার্য ভবন পার হয়ে নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ি মোড় থেকে বাঁদিকের রাস্তা দিয়ে (জহুরুল হক হলের পশ্চিমের রাস্তা) সলিমুল্লাহ হল ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা হয়ে শহীদ মিনারে যেতে পারবেন। নিউমার্কেট ক্রসিং থেকে হোম ইকোনমিকস ও ইডেন কলেজের সামনের রাস্তা দিয়েও আজিমপুর (বেবি আইসক্রিম) মোড়, পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ হল ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা হয়ে শহীদ মিনারে যাওয়া যাবে।
এ ছাড়া, চানখাঁরপুল এলাকা থেকে বকশীবাজার মোড় হয়ে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের রাস্তা দিয়েও পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ হল ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা দিয়ে শহীদ মিনারে যাওয়া যাবে। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্বর ও পেছনের রাস্তা দিয়ে চানখাঁরপুল হয়ে শুধু প্রস্থান করা যাবে, শহীদ মিনারের দিকে আসা যাবে না।
অন্যদিকে, টিএসসি মোড় থেকে জগন্নাথ হলের পূর্ব পাশের রাস্তা, অর্থাৎ শিববাড়ির পশ্চিম পাশ দিয়ে শহীদ মিনারে ও মেডিকেল কলেজে যাওয়ার রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। উপাচার্য ভবন গেট থেকে ফুলার রোড হয়ে ফুলার রোড মোড় পর্যন্ত রাস্তা ও চানখাঁরপুল থেকে কার্জন হল পর্যন্ত রাস্তা জনসাধারণের যাতায়াতের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।