দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনার সর্বশেষ শনাক্ত হওয়া ধরন ওমিক্রনের দাপট পেরিয়ে সংক্রমণ কমে আসার মধ্যেই বেশ কয়েকদিন পর মৃত্যু সংখ্যা ৩০-এর উপরে উঠল। একই সময়ে আরও ৪ হাজার ৭৪৬ জন জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ৩৪ হাজার ১৭৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে এবং আগের জমা কিছু স্যম্পলসহ মোট ৩৪ হাজার ৪৫৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়। শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত ১ কোটি ৩০ লাখ ৬৪ হাজার ২৪৫টি মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে সংক্রামণের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আগের দিন এ হার ১৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, টানা তৃতীয় দিনের মতো একদিনে পাঁচ হাজারের কম মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৪ শতাংশের নিচে রয়েছে টানা দুদিন ধরে। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মহামারির মধ্যে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১৯ লাখ ১৯ হাজার ১০২ জন হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ৮৭২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনা। তবে সরকারি হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সেরে উঠেছেন ১১ হাজার ৪১৭ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৭ লাখ ৩ হাজার ৩০৯ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন। এ হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ৯২১ জন। অর্থাৎ এ সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। উপসর্গবিহীন রোগীরা এ হিসাবে আসেননি।
দেশে করোনার ডেল্টা ধরনের দাপট পেরিয়ে এসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২০০-র ঘরে নেমে এসেছিল গত বছরের শেষ দিকে। এরপর আসে আরেক ধরন ওমিক্রন। নতুন বছরের শুরু থেকে দ্রুত বাড়তে থাকে করোনা সংক্রামণ। একপর্যায়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২৮ জানুয়ারি ৩৩ শতাংশে পৌঁছায়। এরপর সংক্রামণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। ৪ ফেব্রুয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে আসে ১০ হাজারের নিচে। রোববার তা ৫ হাজারের নিচে নামে। এর আগে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫ হাজারের নিচে ছিল ১৫ জানুয়ারি। ওইদিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ৩ হাজার ৪৪৭ জন রোগী শনাক্তের খবর জানিয়েছিল। মহামারির মধ্যে সার্বিক শ?নাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৩ হাজার ৪৮৩ জন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। যা মোট শনাক্তের ৭৩ শতাংশের বেশি। মৃত ৩৪ জনের মধ্যে ২১ জন পুরুষ ও ১৩ নারী। তাদের মধ্যে ২১ জন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এছাড়া বরিশালের চারজন, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রংপুরে দুজন করে এবং রাজশাহীর একজন করে রয়েছেন। তাদের ২৬ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, চারজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, তিনজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং একজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।