ঢাকা: ৩২২ জনের তালিকায় একাধিকবার নাম থাকায় তা সংশোধন করে আগামীকাল বুধবার সার্চ কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
মঙ্গলবার ৪ জন বিশিষ্ট সাংবাদিকের সঙ্গে সার্চ কমিটির বৈঠকের পর এমন তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
এদিন বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেন বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল,চ্যানেল আইয়ের বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার সম্পাদক ইনাম আহমেদ।
আমন্ত্রিত ৮ জন্য জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের মধ্যে এ ৪জন বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে সার্চ কমিটির প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কমিটি এখন নাম সংশোধন করতে বলেছেন, আমি সংশোধন করে আগামীকাল (বুধবার) কমিটির সামনে উপস্থাপন করবো। তারা তাদের কার্যক্রম-পদ্ধতি ঠিক করে এখান থেকে একটা সিলেকশনের দিকে যাবেন।
১০ জনের নাম কখন চূড়ান্ত করা হবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা কমিটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করে ফেলবে।
তিনি বলেন, ৩২২ জনের নাম থেকে কমিয়ে কমিটি কালকে থেকে ফরমাল মিটিং করবে, কিভাবে এটি ছোট করা যায়। তারপর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করে ফেলবে।
বৈঠক শেষে মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সার্চ কমিটি আমাদের জানিয়েছে আমরা সবগুলো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রস্তাব জমা দিতে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। অনেকে দিয়েছেন। অনেকে দেয়নি, বিশেষ করে বিএনপি, কমিউনিস্ট পাটি, বাসদ। তাদের জন্য সার্চ কমিটি আরও সময় বাড়িয়েছে। তবে সার্চ কমিটি জানিয়েছে, তারা আনলিমিটেড টাইম পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমারা বলেছি যোগ্যতার নিরিখে বিবেচিত হলে কমিশনে একজন নারী ও একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি থাকা উচিত। যোগ্যতার ভিত্তিতে সকল পেশার প্রতিনিধি নিয়ে একটি ভারসাম্যমূলক কমিশন করা উচিত। একটি বিশেষ পেশার প্রাধান্য যাতে না থাকে। আমরা বলেছি যাদের নাম তালিকায় আসছে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া দরকার। তাদের কেউ সুবিধা নেওয়ার জন্যে রাজনৈতিক ভোল পাল্টিয়েছেন কিনা, আর্থিক কোনো কেলেঙ্কারীর সাথে তারা সম্পৃক্ত কিনা এটা যাতে দেখা হয়। আমরা বলেছি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেন এমন যোগ্যতর প্রতিনিধিদের যাতে এখানে রাখা হয় সুপারিশে।
প্রস্তাবিতদের নাম প্রকাশ নিয়ে তিনি বলেন, যে ৩২২ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, তা প্রকাশ করা ঠিক হয়নি। কারণ যাদের নাম এখানে দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, তারা জানেনও না তাদের নাম কে প্রস্তাব করেছে। তালিকায় নাম থাকাতে তারা খুব খুশি হয়েছেন, কিন্তু কোনো কারণে যদি তারা চূড়ান্ত তালিকায় নির্বাচিত না হন তখন কিন্তু তারা একটি বিব্রতকর অবস্থায় পড়বেন। কাজেই কারো সম্মতি না নিয়ে কারো নাম প্রকাশ করা উচিত হয়নি বলে মনে হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, আমরা বলেছি, মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যাদের নাম প্রস্তাব করা হবে, তারা যেন সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য হন, তাদের যেন কোন বিতর্ক না থাকে। কারণ গ্রহণযোগ্যতা একটি বড় বিষয়।
তিনি বলেন, যে নাম গুলো প্রকাশ করা হয়েছে এখানে অনেক সক্ষম মানুষ আছেন। নির্বাচনকালীন সময়ে জনপ্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য সবাইকে দিকনির্দেশনা দেওয়া এবং কঠোর হুশিয়ারি দিয়ে নির্বাচন কন্ট্রোল করতে পারার মতো সক্ষমতা তালিকার অনেকেরই রয়েছে। যারা সক্ষম, তাদের নাম গুলোই যেন গ্রহণ করা হয়।
নাম প্রকাশ প্রশ্নে নঈম নিজাম বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে দেশের মানুষের অনেক আগ্রহ রয়েছে। এই নির্বাচন নিয়ে অনেকের প্রত্যাশা রয়েছে। যারা নির্বাচন কমিশনে আসছেন, তারা বাংলাদেশকে নতুন একটি জায়গায় তৈরি করার ক্ষেত্রে, বাংলাদেশের নেতৃত্বকে নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করবেন, তাদের নাম জনসম্মুখে আসতেই পারে। তবে অবশ্যই তালিকায় নাম দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সম্মতি নিতে হবে।