ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল খুশি না। সন্তুষ্ট না।
আমরা তাদের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। আমরা বিব্রত নই।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনের লেকভিউ চত্বরে বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে এরকম হয়, না হলে আরেক রকম হয়। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল আমাদের ওপর খুশি না। সন্তুষ্ট না। আমরা তাদের আস্থা অর্জন করতে পারি নাই।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র রক্ষা করার দায়িত্ব আমার গণতন্ত্র রক্ষা করার দায়িত্ব সকলের। ব্যর্থ হয়ে থাকলে সকলের ব্যর্থতা। আর সফল হয়ে থাকলে সকলের সফলতা। নির্বাচনের দায় দায়িত্ব সকলের। আমরা কয়টা লোক তো করতে পারবো না।
অবসরে কোনো বিব্রতবোধ করবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। কোনো বিব্রত নই। আমাদের কোনো দুর্বলতা নেই। কমতি নেই। সুতরাং কোনো বিব্রত নই।
কবিতা খানম বলেন, সততা, দক্ষতা এবং সুষ্ঠুভাবে কাজ তুলে আনার মানসিকতা না থাকলে অনেক কঠিন হয়ে যায়। নির্বাচনে যেহেতু প্রার্থী, সমর্থক, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা জড়িত। একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ সুষ্ঠুভাবে তুলে আনতে জবাবদিহিতা, সততা, দক্ষতা না থাকলে তুলে আনা যায় না। আমরা পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেছি। আপনারা মূল্যায়ন করবেন।
এ সময় রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা কী করেছি কী করতে পারি নাই আর কী করা উচিত ছিল এ নিয়ে প্রতিদিন বিস্তর আলোচনা হচ্ছে।
এটা ভুল পারসেপশন আছে সমাজ ও গণমাধ্যমে। বলতে থাকেন ইসির অসীম ক্ষমতা। আকাশের দিকে তাকিয়ে বলি এদের কী আল্লাহ ভগবান নেই। তাদেরই তো কেবল অসীম ক্ষমতা।
সংবিধান ও আইনের দ্বারা পরিচালিত হবো এইটুকুই ছিল আমাদের শপথ। আল্লাহহর আসনে বসিয়ে দেওয়া কী অন্যায় নয় অসীম ক্ষমতা কারো নাই। আর ইসির তো আইনের বাইরে তো নেইই। আমাদের কার্যক্রমে বিরুদ্ধে আদালতে যেতে পারেন। আদালতের নির্দেশ মেনেছি। আমাদের ক্ষমতা অসীম হলে আদালত থাকে না, সৃষ্টিকর্তা থাকে না।
এই কমিশনার বলেন, আইনের আওতায় আনতে আমরা যা সম্ভব এনেছি। হয়তোবা অনেকের চাওয়ার মতো করে হয়নি। তারপরও বলতে পারি, আমরা যে শপথ নিয়েছিলাম তা বাস্তবায়নে পূর্ণাঙ্গ চেষ্টা করেছি। মূল্যায়ণ করার দায়িত্ব আপনাদের ওপর ছেড়ে দিলাম। আমি আত্ম সমালোচনা করি। সেটা করার পাবলিক করার অবকাশ নেই। আত্ম সমালোচনা করি নিজেকে শোধরানোর জন্য।
তিনি বলেন, যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে মাঠে কাজ করেন তারা যদি আমাদের কাছে তুলে না ধরেন তাহলে আমরা কীভাবে জানবো কর্মকর্তা, বাহিনী ও পর্যবেক্ষক এবং গণমাধ্যম যদি যথাসময়ে না তুলে ধরেন, আমরা তো পারবো না। জানানো যদি না হয় এবং অপরাধী করা হয়, তাহলে কষ্ট পাই।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ও যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জমান উপস্থিত ছিলেন।
২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সাবেক বেসামরিক আমলা কেএম নূরুল হুদাকে সিইসি; মাহবুব তালকুদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও সামরিক আমলা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। সংবিধান অনুযায়ী, পাঁচ বছর দায়িত্ব শেষে তাদের মেয়াদ শেষ হলো ২০২২ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি (সোমবার)।