হিজাব বিতর্কে ভারতের কর্ণাটক যখন উত্তপ্ত তখন নারীর পোশাক নিয়ে মন্তব্য করে বিপাকে সেখানে ক্ষমতাসীন দলের একজন এমএলএ এমপি রেনাকাচার্য্য। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের রাজনৈতিক সচিব তিনি। হোন্নালি থেকে নির্বাচিত এই এমএলএ বুধবার বলেছেন, ধর্ষণ বৃদ্ধির জন্য নারীর পোশাক দায়ী। কিছু নারী এমন পোশাক পরেন, যা পুরুষদের উত্তেজিত করে। এ কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে ধর্ষণ। কলেজে ছাত্রীরা নির্ধারিত ইউনিফরম পরবে নাকি পূর্ণাঙ্গ শরীর ঢেকে রাখা পোশাক পরবে তা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াংকা গান্ধী ভদ্রের টুইটের জবাবে তিনি বক্তব্য রাখছিলেন। পরে নিজের মন্তব্যের জন্য মাফ চেয়েছেন রেনাকাচার্য্য।
এ খবর দিয়েছে ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই।
এমপি রেনাকাচার্য্য মন্তব্য করার পর বুঝতে পারেন, এ নিয়ে উত্তেজনা-বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে। এরপরই তিনি আবার বলেন, যদি তার এই মন্তব্যে নারীরা আহত হয়ে থাকেন তাহলে তাদের কাছে তিনি ক্ষমা চাইবেন।
প্রিয়াংকা গান্ধী ভদ্র কর্ণাটকের হিজাব বিতর্ক নিয়ে টুইটে লিখেছেন, বিকিনি হোক, ঘুঙ্গট হোক, জিন্স বা হিজাব হোক- একজন নারী কি পরবেন তা তার বেছে নেয়ার অধিকার আছে। ভারতের সংবিধান তাদের এই অধিকারকে নিশ্চিত করেছে। নারীদের হয়রানি বন্ধ করুন।
প্রিয়াংকার এই টুইটের জবাবে এমপি রেনাকাচার্য্য বলেছেন, প্রিয়াংকা গান্ধী একজন নারী। কংগ্রেসের একজন নেত্রী। হিজাব ইস্যুতে আমরা নারীর মৌলিক অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলছি না। কেরালা এবং বোম্বে হাইকোর্ট বলেছে- স্কুল কলেজে ইউনিফরম বাধ্যতামূলক। সরকারও সেই একই কথা বলে। ছাত্রীদের জন্য পোশাক হিসেবে বিকিনি শব্দের ব্যবহার হীনতর। নয়া দিল্লিতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কলেজে পড়ার সময় শিক্ষার্থীদের ইউনিফরম পরা উচিত অথবা এমন একটি পোশাক পরা উচিত, যা তার পুরো শরীরকে ঢেকে রাখে। কিছু নারী এমন পোশাক পরেন যে, তা পুরুষদের উত্তেজিত করে। এ জন্য ধর্ষণ বাড়ছে। এটা ভাল লক্ষণ নয়। কারণ, আমার দেশে নারীদের সম্মান আছে। তাদেরকে আমরা মা হিসেবে সম্মান করি। প্রিয়াংকা গান্ধী ভদ্রকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে ছাত্রী ও নারীদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান সাবেক এই মন্ত্রী।
তিনি আরও বলেছেন, প্রিয়াংকা গান্ধী দেশের সংস্কৃতি ও রীতিনীতি বোঝেন না। তার মা হলেন ইতালিয়ান সংস্কৃতির। তিনিও বিয়ে করেছেন..। এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। তিনি যে কথা বলেছেন, তার অর্থ অনেক দূর পর্যন্ত প্রসারিত, যা ঠিক নয়। তিনি আরও বলেন, ড্রেস কোড নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করছে না। পরে তিনি আবার নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। বলেছেন, যদি এই বিবৃতি আমার বোনদের আহত করে থাকে, তাহলে অবশ্যই তাদের কাছে আমি ক্ষমা চাই। কারণ, তাদেরকে সম্মান করি।