যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিংকেন বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ওয়াশিংটন ডিসি সফরের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা’র কূটনৈতিক প্রতিনিধিকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই। তিনি বলেছেন, আজ (বুধবার) সকালে, আমি এই আমন্ত্রণ সম্পর্কে জানতে পেরেছি।’
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে এক বার্তায় এই আমন্ত্রণ জানিয়েছে। ব্লিংকেন গত ডিসেম্বরে এক ফোনালাপকালে এই বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। মোমেন বলেন, ‘ওই সময়ে তিনি (ব্লিংকেন) বলেন, এ বছরের বসন্তে ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি আমার সাথে সরাসরি বৈঠকে মিলিত হতে চান।’
ঢাকায় এই উদ্যোগ সম্পর্কে অবগত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ওই বার্তায় আরো বলা হয়েছে যে, মোমেনের সুবিধাসম্মত সম্মতিসাপেক্ষে ৪ এপিল ওয়াশিংটন ডিসিতে ব্লিংকেন তার অফিসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে বৈঠকে বসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
জটিল বৈশ্বিক রাজনীতির মধ্যে পাকিস্তানের বিপক্ষে নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের পর নতুন স্বাধীন দেশের রাজধানী হিসেবে ঢাকার অভ্যুদয় ঘটলে, ১৯৭২ সালের ৪ এপ্রিল তৎকালীন মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বাংলাদেশ দূতাবাসে যৌথভাবে ঐতিহাসিক দিনটি উদযাপন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এতে ব্লিংকেনও অংশ গ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তারা আরো বলেন, এই বার্ষিকী উদযাপনের সাথে এক গুচ্ছ আয়োজনেরও উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। মার্কিন কর্মকর্তারা এর আগে বলেছিলেন, ওয়াশিংটন আগামী ৫০ বছরে অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে বলে আশা করছে।
‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগে বাংলাদেশী অপরাধ-দমন এলিট বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কূটনৈতিক ও গণমাধ্যম তোলপাড়ের মধ্যে এই বর্ষপূর্তির আমন্ত্রণ দেয়া হল।
বাসস প্রতিনিধিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মোমেন বুধবার পুনরুল্লেখ করে বলেন, এই ইস্যু নিয়ে দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক যোগাযোগ হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করে মোমেন ব্লিংকেনকে একটি চিঠি দিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘৭৩ জন মার্কিন সিনেটর ও কংগ্রেস সদস্যের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে, যারা পররাষ্ট্র বিষয়ক র্যাব ইস্যুর সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কংগ্রেস কমিটির সদস্য।’
চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসভিত্তিক মার্কিন কর্মকর্তারা কূটনেতিক সাংবাদিকদের সাথে অনানুষ্ঠানিক মত বিনিময়কালে বলেছিলেন, ওয়াশিংটন আগামী ৫০ বছরে বস্তুত বাংলাদেশের সাথে নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘শক্তিশালী’ ও ‘বড় ধরনের’ সহযোগিতা করতে আগ্রহী।
সূত্র : বাসস