ঢাকা: শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সার এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা জহির রায়হানের বোন নাফিসা কবীর মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় একজন কর্মী ছিলেন তিনি।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৯০ বছর।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সময় সকাল সাতটায় নিউমোনিয়াজনিত জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট লুইসের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। নাফিসা কবীর দীর্ঘ দিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন।
মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার সাবেক প্রিন্সিপাল মরহুম মওলানা হাবীব উল্ল্যার জ্যেষ্ঠা কন্যা নাফিসা কবীর পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন। অত্যন্ত মেধাবী ও প্রতিভাসম্পন্ন ছাত্রী হিসেবে তিনি তৎকালীন ফেনী মহকুমার আমিরাবাদ হাই স্কুল থেকে সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করে গোল্ড মেডেল অর্জন করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।
শিক্ষা জীবনে ভাইদের সঙ্গে কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন তিনি। তার স্বামী মরহুম ডা. এম. এ কবীর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের এমবিবিএস প্রথম ব্যাচের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে স্বামীর সঙ্গে ভাষা আন্দোলনে তিনিও ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন।
গত শতাব্দীর ষাটের দশকের শুরুতেই তিনি স্বামীর বিদেশে উচ্চতর লেখাপড়ার সুবাদে তার সঙ্গে প্রথমে যুক্তরাজ্য ও পরে যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন এবং সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
মানবতা, নারী-পুরুষের সমতা, সুশাসন এবং গণতন্ত্রের উন্নয়নে আমৃত্যু কাজ করে যাওয়া বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী নাফিসা কবীর মৃত্যুকালে চার মেয়ে, এক ছেলে, নাতি-নাতনি, দুই অনুজ, একজন সহোদরা বোনসহ আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।