ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গত বছরের শুরুর তুলনায় ডিসেম্বরে এসে কোভিড রোগী ছয়গুণ বেড়েছে এবং তাদের বেশিরভাগই ওমিক্রনে আক্রান্ত বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার (২৯ জানুয়ারি) হাসপাতালের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক।
ঢামেকে করোনা রোগী বেড়েছে, অধিকাংশ ওমিক্রনে আক্রান্ত
স্বাস্থ্য সময় ডেস্ক
দেশের সবচেয়ে বড় এ হাসপাতালটিতে গত এক বছরে কোভিড রোগী বাড়ার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, জানুয়ারি মাসে যে পরিমাণ করোনা রোগী ভর্তি ছিল, তা ডিসেম্বরে এসে এর ছয়গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
মহামারির মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় গত নভেম্বরের শেষে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক নতুন ধরন ওমিক্রনের আবির্ভাবের পর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশেও সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে।
নাজমুল হক বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে প্রথম দিকে যত রোগী ভর্তি হয়েছিল, তারা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হলেও বর্তমানে যত রোগী পাওয়া যাচ্ছে, এর মধ্যে অধিকাংশই ওমিক্রনে আক্রান্ত। এ সমস্ত রোগীর তেমন কোনো অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে না। যার ফলে মৃত্যুর সংখ্যাও কম। যারা মারা যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে দেখা গেছে তারা শুধু মাত্র ওমিক্রনে আক্রান্ত নয়, সাথে বিভিন্ন রকমের সমস্যাও রয়েছে।
অতি সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়লেও এতদিন মৃত্যুর সংখ্যা কম দেখে অনেকের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি পালনে উদাসীনতা দেখা গেলেও বিশেষজ্ঞরা বরাবরই সতর্ক করে আসছিলেন।
আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত হারে বাড়ছে জানিয়ে সচেতনতার উপর জোর দিয়ে হাসপাতাল পরিচালক বলেন, প্রত্যেককে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
হাসপাতালের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি জানান, ঢাকা মেডিকেলে গত একবছরে কোভিড-১৯ রোগী ভর্তি হয়েছেন ১৭ হাজার ৬০০ জন। প্রতিদিন গড়ে ২৫ জন মারা গেছেন। এর কারণ, এখানে মুমূর্ষু রোগী বেশি আসে। অন্য সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। অনেকের অবস্থা জটিল থাকে। তাই কাউকে কাউকে বাঁচানো সম্ভব হয় না।
বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত এক বছরে পাঁচ লাখেরও বেশি করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হয়েছে এবং এখনও প্রতিদিন পাঁচ হাজার টিকা দেয়া হচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসা কার্যক্রম তুলে ধরে জানানো হয়, গত বছর বহির্বিভাগে ৭ লাখ ৩০ হাজার রোগী দেখা হয়েছে। জরুরি বিভাগে দেখা হয়েছে আড়াইলাখের বেশি রোগী। জরুরি বিভাগ থেকে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৪ হাজারের বেশি রোগী। প্রায় ১৯ হাজার বড় অপারেশন হয়েছে। এছাড়া প্রায় ২৪ হাজার ছোট ছোট অপারেশন করা হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক।