সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবিতে অহিংস আন্দোলনের অংশ হিসেবে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
অহিংস আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে এক প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যান্ড দল নোঙর সঙ্গীত পরিবেশন করে। গানে গানে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি করেন ব্যান্ড দলের সদস্য ও শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, ক্যাম্পাসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিলেন উপাচার্য। এর প্রতিবাদে তার পদত্যাগের আগ পর্যন্ত আমরা প্রতিদিন প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবো।
গত ১৬ জানুয়ারি বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।
এরপর শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় উপাচার্যকে দায়ী করে তার পদত্যাগ দাবি করে আমরণ অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। ২৬ জানুয়ারি টানা সাতদিনের অনশন ভাঙলেও উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে অনশরতদের উৎসর্গ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ‘মৃত্যু অথবা মুক্তি’ শিরোনামে আলপনা আঁকেন শিক্ষার্থীরা। একইদিন বিকেলে উপাচার্যবিরোধী প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয়। যদিও খেলায় ফুটবলে উপাচার্যের নাম উল্লেখ করে ‘ফরিদ’ লেখায় বিষয়টি ‘বাড়াবাড়ি’ বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মুক্ত আলোচনাসভা ও শনিবার বিকেলে ক্যাম্পাসে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।