চট্টগ্রাম প্রতিদিনই নিয়ম করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। চলতি জানুয়ারি মাস থেকে সংক্রমণের আকার তীব্র হতে শুরু হয়। তবে প্রথম দিকে কেবল সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও এখন ক্রমে মৃত্যুও যোগ হচ্ছে। প্রতিদিনই এক থেকে তিনজন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রামে আক্রান্ত হয়ে মারা যান দুইজন। তবে দুইজনই উপজেলার বাসিন্দা। গত ২৬ জানুয়ারি আক্রান্ত হয়ে মারা যান একজন। গত ২৫ জানুয়ারি মারা যান তিনজন। তিনজনই উপজেলার। ২২, ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি কোনো মৃত্যু ছিল না। তবে ২১ জানুয়ারি একজনের মৃত্যু হয়। এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি তিনজনের মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রামে গতকাল বুধবার ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ১৪২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ১২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মহানগর এলাকায় ৭৯৭ জন ও ১৫ উপজেলায় ৩২৪ জন। এই সময় মৃত্যু হয় দুইজনের। সংক্রমণের হার ছিল ৩৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, জানুয়ারি মাসে সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়। তবে শুরুর দিকে সংক্রমণ বাড়লেও মৃত্যু ছিল না। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। বিষয়টি উদ্বেগের।
তিনি বলেন, সংক্রমণ বাড়ছে। অথচ এখনও অনেকের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না। সরকারি নির্দেশনা মেনে সতর্ক ও সচেতন না হলে আমাদের সকলকেই এর খেসারত দিতে হবে।
চিকিৎসকদের সংগঠন ওয়াই স্যাবের ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট ডা. হামিদ হোছাইন আজাদ বলেন, আমাদের অনেকের অসচেতনতার কারণে সংক্রমণ বাড়ছে। সঙ্গে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুও হচ্ছে। তবে উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর পরই চিকিৎসা শুরু করা গেলে এবং ক্রিটিক্যাল কোনো রোগে আক্রান্ত না থাকলে রোগী সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া টিকা দেওয়া থাকলে ঝুঁকিটা কম থাকে।
জানা যায়, ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে মোট আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৩৬ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৮৪ হাজার ৬৩৭ জন এবং ১৫ উপজেলায় ৩১ হাজার ৩৪৩ জন। ইতোমধ্যে মারা গেছেন এক হাজার ৩৫০ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৭২৯ জন ও ১৫ উপজেলায় ৬২১ জন। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি ১৫টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা চলছে। চট্টগ্রামে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৩ এপ্রিল এবং আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৯ এপ্রিল।