রাঙামাটিতে কিছুতেই থামছে না করোনার সংক্রমণ। প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ। এতে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বেড়েছে পাহাড়বাসীর মধ্যে। আক্রান্ত থেকে বাদ পড়ছে না নারী-শিশুরাও। তাই সংক্রমণ প্রতিরোধে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। তবে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, মানুষ সচেতন না হলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটিতে এখন যেন করোনাভাইরাসের রাজত্ব। প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তাই ভিড় বেড়েছে নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে। মৃত্যুর হার একেবারে না থাকলেও আক্রান্তের সংখ্যা এখন এক তৃতীয়াংশ। যা অন্যান্য জেলার তুলানায় কয়েকগুন বেশি।
রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জেনের ডা. বিপাশ খীসা বলছেন, গত আড়াই মাসে রাঙামাটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৮৮জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় রাঙামাটি জেলায় ১৮৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭৫ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ পাওয়া গেছে। নতুন সংক্রমিতদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৪৫, রাজস্থলী ২, বাঘাইছড়ি ৬, বিলাইছড়ি ৬, জুরাছড়ি ২, কাপ্তাই ৮, লংগদু ৩, নানিয়ারচর ২ ও কাউখালী উপজেলায় একজন। আক্রান্তের মধ্যে বেশির ভাগের কোন লক্ষণ চোখে পড়ছে না। তবে তারা করোনা পজেটিভ। তাই আইসোলেশন সেন্টারেও কেউ আসছে না। বর্তমানে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে একজন রোগী ভর্তি আছেন।
তাই মানুষ সচেতন না হলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না বলে জানিয়েছেন করোনা ফোকাল পারসন ডা. বিনত শেখর চাকমা। তিনি বলেন, রাঙামাটিতে যে হারে করোনা বাড়ছে তার জন্য অনেকটা আক্রান্ত মানুষরাই দায়ী। লক্ষণ দেখা দিলেও নমুনা পরীক্ষা করতে যায় না অনেকে ভয়ে। গোপন করার কারণে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পরছে এ করোনা। একজনের জন্য পরিবারের সব সদস্য আক্রান্ত হচ্ছে। আবার অনেকেই আসছে নমুনা পরীক্ষা করতে। যারা আক্রান্ত তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নিয়মিত খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে আক্রান্ত রোগীদের। এভাবে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেলে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে মরণঘাতি করোনাভাইরাস।
অন্যদিকে এরপরও সচেতন নয় রাঙামাটিবাসী। তাই মানুষকে সচেনত করতে রাতদিন মাঠে কাজ করছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান বলছেন, করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। আক্রান্ত রোগীদের বাসায় লাল পতাকা দিয়ে অন্যদের সচেতন করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে করা হচ্ছে জরিমানা। শুধু তাই নয়। অফিস আদালত, হাট বাজার সবখানে জেলা প্রশাসনের বিশেষ দল কাজ করছে। মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হচ্ছে শতভাগ।