বিচারকাজ ‘বন্ধ’, উপচে পড়ছে চট্টগ্রামের কারাগার

Slider বাংলার আদালত

Chittagong_jail
দুই যুগ আগের এক সিদ্ধান্তে চট্টগ্রামের আইনজীবীরা হরতালের মধ্যে মামলার শুনানি না করায় কারাগারে আটক নিয়মিত মামলার আসামিদের জামিন নিষ্পত্তি হচ্ছে না গত এক মাস ধরে।

এই পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দির সংখ্যা ধারণ ক্ষমতার ছয়গুণ ছাড়িয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

১৯৮৯ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি হরতালে বিচারিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। ২৬ বছর আগের সেই সিদ্ধান্ত এখনো তারা অনুসরণ করছেন।

তাদের এ সিদ্ধান্তের কারণে চলতি মাসের শুরু থেকে চট্টগ্রামের আদালতে কোনো মামলার শুনানি হয়নি। নাশকতার ঘটনায় গ্রেপ্তারদের কারাগার বা রিমান্ডে পাঠানোর বিষয়ে খাস কামরা থেকেই সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন বিচারকরা।

কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্বাভাবিক কর্মদিবসে প্রতিদিন গড়ে ৪০-৫০ জন আসামি জামিনে ছাড়া পেলেও বর্তমানে তা দু’একজনে নেমে এসেছে। এ অবস্থায় জামিনপ্রত্যাশী ৪৭ জন বন্দি কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জেলা প্রশাসককে চিঠিও দিয়েছেন।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার ছগির মিয়া  বলেন, “বর্তমানে উচ্চ আদালত ও অন্য জেলার আদালত থেকে যেসব আসামি জামিন পাচ্ছেন শুধু তারাই ছাড়া পাচ্ছেন। তবে এ সংখ্যা খুবই কম।”

হরতালে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় জামিনযোগ্য অপরাধে অনেককেই দীর্ঘদিন কারাবাসে থাকতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

কারাগার থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, এক হাজার ৮৫৩ জন ধারণ ক্ষমতার চট্টগ্রাম কারাগারে গত ৬ জানুয়ারি পাঁচ হাজার ৮৫৮ জন বন্দি ছিলেন।

একমাসের ব্যবধানে ৬ ফেব্রুয়ারি কারাগারে বন্দির সংখ্যা বেড়ে ছয় হাজার ২২৯ জনে দাঁড়ায়। গত বুধবার সেখানে বন্দির সংখ্যা ছিল ছয় হাজার ৭৫৬ জন।

এতে নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে জানিয়ে ছগির মিয়া বলেন, “এই কারাগারে গড়ে সাড়ে চার হাজার বন্দি থাকে। সে হিসেবে তাদের জন্য যে ধরনের সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা আমরা করতে পারি এখন তা হচ্ছে না। বিপুল সংখ্যক বন্দির জন্য খাবার, পানি সরবরাহসহ বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে।”

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, “সংকট নিরসনে জেলা আইনজীবী সমিতি, আইন সচিব ও বিচারকদের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেক জেলায় বিচারিক কার্যক্রম চলছে। আশা করছি দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে।”

তবে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বলছেন, জামিনযোগ্য অপরাধে গ্রেপ্তারদের শুনানিতে অংশ নিতে চাইলে আইনজীবীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে না।

গত ৬ জানুয়ারি থেকে ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধের মধ্যে ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে শুক্র ও শনিবার ছাড়া প্রতিদিনই হরতাল হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *