করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক চিত্রশিল্পী মাহমুদুল হক। মৃত্যুকালে মাহমুদুল হকের বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে এক সপ্তাহ আগে অধ্যাপক মাহমুদুল হককে ইউনাইটেড হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত শুক্রবার রাত থেকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারী) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়
প্রয়াত চিত্রশিল্পী মাহমুদুল হকের ছেলে সাদাত ইবনে মাহমুদ এসব তথ্য জানিয়েছেন। সাদাত জানান, বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন ও জানাজা শেষে তার বাবাকে বাগেরহাটের রামপালে নিয়ে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
মাহমুদুল হকের ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কন ও চিত্রায়ন বিভাগের অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হক জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে মাহমুদুল হক মারা যান। তার করোনা পজিটিভ ছিল। আগামীকাল বুধবার বেলা ১১টায় চারুকলায় আনা হবে এই চিত্রশিল্পীর মরদেহ। তারপর তাকে বাগেরহাটের রামপালে বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে।
মাহমুদুল হক ১৯৪৫ সালে বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি তৎকালীন চারু ও কারুকলা কলেজ (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ) থেকে বিএফএ এবং ১৯৮৪ সালে জাপানের সুকুবা ইউনিভার্সিটি থেকে এমএফএ ডিগ্রি পান। তিনি দুই বছর জাপানে ছাপচিত্রের উপর গবেষণা করেন। ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন মা্হমুদুল হক। ২০১০ সালে তিনি প্রিন্টমেকিং বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে অবসর নেন।
মাহমুদুল হক চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ পর্যন্ত তার ৩৯টি একক প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছে এবং বহু দলবদ্ধ প্রদর্শনীতে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে মাহমুদুল হক ১৯৮২ সালে জাপানের সুচিউরা সিটি শ্রেষ্ঠ চিত্রকলার পুরস্কার (১৯৮২), বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, কুয়েত আন্তর্জাতিক বিয়েনালে পুরস্কার, সুলতান পদকসহ বহু পুরস্কার পান।