মারধরের পর ‘ফেল’ করানোর অভিযোগ তুললেন নৌকার প্রার্থী

Slider টপ নিউজ


নাম তার মো. আনোয়ারুল হক। পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ৩নং নান্দাইল ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন তিনি।

তিনি অভিযোগ তুলেছেন, “ভোটের দিন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা তাকে মারধর করেন এবং নির্বাচনে ‘ফেল’ করান।
আনোয়ারুল হক বলেন, “৯টি কেন্দ্রের সব কটাতে আমিই এগিয়েছিলাম। সন্ধ্যার পর একটি কেন্দ্রে গেলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্দেশে আমাকে ধরে নিয়ে মারধর করে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। অল্পের জন্য বেঁচে গেছি। এরপরই দুটি কেন্দ্রের ভোট ডাকাতি করা হয়েছে। এতে আমি পরাজিত হয়েছি।”

রবিবার সন্ধ্যার পর নিজ এলাকায় সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে এভাবেই নিজে পরাজিত হওয়ার বর্ণনা দেন নান্দাইলের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুল হক।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুল হক নৌকার মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন। তার সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি হাতেম আলী ও আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন কাজল। কিন্তু অন্যান্য ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নৌকার পক্ষে কাজ করলেও এ ইউনিয়নের চিত্র ছিল উল্টো।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করেছেন। এ নিয়ে রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে পরাজিত প্রার্থী আনোয়ারুল হক বলেন, “নির্বাচনের দিন রাত ৮টা নাগাদ স্থানীয় দাতারাটিয়া ও সাভার ভোটকেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছে না দেখে তিনি খবর নেওয়ার জন্য সেখানে যান। এ খবর পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা তার ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে তাকে রাস্তায় ফেলে বেদম মারধর করা হয়। তিনি জখম হয়ে সড়কে পড়ে থাকেন। তার দুই স্বজন তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কায় তিনি পরদিন দিনের বেলায় নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।”

তিনি বলেন, সেদিন তার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। হামলার সময় তিনি দলীয় নেতা ও প্রশাসনের কাছে মোবাইলে সহায়তা চেয়েও তা পাননি বলে অভিযোগ করেন।

তিনি আফসোস করে বলেন, “আমার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হলেও দলের কিছু নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিজয় মিছিলে যোগ দিয়েছেন। আপনারা (সাংবাদিক) বুঝে নিন নান্দাইলে আওয়ামী লীগের অবস্থা কোন পর্যায়ে গেছে।”

তিনি বলেন, “জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন। কিন্তু নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতারা আমাকে কোনও সহায়তা করেননি।”

আনোয়ারুল হক দাতারাটিয়া সপ্রাবি ও সাভার সপ্রাবি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল পুনর্গণনার দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান মো. সাইদুর রহমান, মুক্তবাজার কমিটির সভাপতি মো. হাতেম আলী, এলাকার মুরব্বি আবদুল লতিফসহ রসুলপুর গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *