দুনিয়ার জীবন পরকালের তুলনায় অতি অল্প

লাইফস্টাইল

আল কোরআনে আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেন, ‘এ পার্থিব জীবন ক্রীড়া কৌতুক ছাড়া কিছুই নয়। নিশ্চয় পরকালের জীবনই প্রকৃত জীবন, যদি তারা জানত।’ সুরা আনকাবুত আয়াত ৬৪। আমাদের দুনিয়ার জীবন অল্প কিছুদিনের। নিছক একটি সফরের মতো। আসল জীবন পরকাল। চিরস্থায়ী জীবন। আমরা এ জীবনে যত আরাম-আয়েশে থাকি না কেন কিংবা অঢেল সম্পদের মালিকই হই না কেন একদিন আমাদের এ পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে।

এ সংক্ষিপ্ত জীবনে আমরা আরাম-আয়েশ ত্যাগ করে যদি পরকালের কথা ভেবে বেশি বেশি নেক আমল করতে পারি তবেই আমাদের জীবনের সার্থকতা। আল্লাহ বলেন, ‘কিন্তু তোমরা তো পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাক।’ সুরা আলা আয়াত ১৬। সুরা আনয়ামে বর্ণিত হয়েছে, ‘পার্থিব জীবন ক্রীড়া কৌতুক ছাড়া কিছুই নয়। সুতরাং যারা তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের জন্য আখিরাতের আবাসই শ্রেয়।’ আয়াত ৩২।

এখানে ক্রীড়া কৌতুকের সঙ্গে দুনিয়ার জীবনকে তুলনা করার অর্থ হলো মানুষ পরকালের জীবন ভুলে গিয়ে দুনিয়ার জীবন নিয়ে ব্যস্ত দিনরাত পার করছে। পরকালে তার জন্য যে জান্নাতের পুরস্কার রয়েছে তা সে বেমালুম ভুলে আছে। দুনিয়ার মোহ তাকে বিভ্রান্ত করে রেখেছে। মানুষের আসল জীবন আখিরাতের জীবন। যা চিরকাল ও চিরস্থায়ী।
সুরা আলে ইমরানে আল্লাহ বলেন, ‘নারী, সন্তান, সোনা-রুপার অঢেল ধনসম্পদ, চিহ্নিত ঘোড়া, গবাদি পশু, খেত-খামার এসব জিনিসের প্রতি মানুষের ভালোবাসা শোভনীয় করে তোলা হয়েছে। এসব মূলত দুনিয়ার জীবনের ভোগের সামগ্রী মাত্র। স্থায়ী জীবনের উৎকৃষ্ট আশ্রয় তো আল্লাহতায়লার কাছেই রয়েছে।’ আয়াত ১৪।

আমরা দুনিয়ার যে সম্পদের জন্য পাগলপারা তা আখিরাতের তুলনায় অতি নগণ্য। দুনিয়াপ্রীতি ত্যাগ করে আমাদের উচিত হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তাঁর বিধান মোতাবেক জীবন পরিচালনা করা। আমাদের মনে রাখতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টিই হচ্ছে আমাদের পরম ও চরম সম্পদ। এ জীবন ক্ষণস্থায়ী। এ দুনিয়া ছেড়ে আমাদের সবাইকে চলে যেতে হবে।

সুতরাং পৃথিবীর সম্পদের প্রতি মনোনিবেশ না করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পরকালে সম্পদশালী হওয়ার জন্য আমাদের সর্বদা সচেষ্ট হওয়া উচিত। সুরা বাকারায় আল্লাহ বলেন, ‘যারা কুফরি করেছে দুনিয়ার জীবনকে তাদের জন্য সুশোভিত করা হয়েছে। ফলে তারা মুমিনদের উপহাস করে। অথচ কিয়ামতের দিন মুত্তাকিরাই তাদের ওপর থাকবে।

আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে অগণিত রিজিক দান করেন।’ আয়াত ২১২। সুতরাং স্পষ্ট বোঝা গেল এ দুনিয়া কাফিরদের জন্য সুশোভিত করা হয়েছে, মুত্তাকিদের জন্য নয়। সুতরাং দুনিয়ার জীবন পরিত্যাগ করে যাতে ইমানি জীবন গড়তে পারি সেভাবেই সর্বদা চেষ্টা করা উচিত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সে তৌফিক দান করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *