গ্রাম বাংলা ডেস্ক: গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গ্রামীণ ব্যাংকের অধিকার আদায়ের লড়াই চলবে। যতক্ষন পযন্ত অধিকার প্রতিষ্ঠা না হয় ততক্ষন লড়াই চালিয়ে যাবার ঘোষনা দিয়েছেন তিনি।
শনিবার সোশ্যাল বিজনেস ডে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের বিরতিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ অঙ্গীকার করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, গরিব মানুষের জন্যই গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আর সরকার এই ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা দরিদ্র মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। যে লক্ষ্য নিয়ে এই ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সেই উদ্দেশ্যে ভেস্তে দিতে পারি না।
সরকার গ্রামীণ ব্যাংকের জন্য নতুন আইন করছে। এ আইন পাস হলে বেশিরভাগ শেয়ার সরকারের হাতে চলে যাবে। এর ফলে গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে।
এর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডাব্লিউ মজীনাসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত বক্তব্য রাখেন। এবারের সোশ্যাল বিজনেস ডে’র মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর জাস্টিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বেকারত্ব সব জায়গায় রয়েছে। কিন্তু একজন মানুষও বেকার থাকবে না। এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ। আর এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাজ করছে সোশ্যাল বিজনেস।
অর্থনীতি আমাদের সঙ্গে যে ব্যবহার করছে তাতে আমরা হতাশ। তরুণরা আরো বেশি হতাশ। এই হতাশা থেকেই আমরা সোশ্যাল বিজনেসের উদ্যোগ নেই।
তিনি বলেন, পুরো শিক্ষাব্যবস্থাই ভুল। আমরা চাকরিপ্রার্থী হিসেবে শিক্ষার্থীদের তৈরি করছি। মানবিক গুণাবলীর অধিকারী হিসেবে এটি লজ্জার।
দিবসটি পঞ্চমবারের মতো পালিত হওয়া সোশ্যাল বিজনেস ডে’র অনুষ্ঠানটি ৮৯টি দেশ সরাসরি দেখছে। অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ইউনূস সেন্টার। ‘আমরা চাকরি প্রার্থী নই, চাকরি দাতা’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে এবারের সোশ্যাল বিজনেস ডে পালিত হতে যাচ্ছে।
সোশ্যাল বিজনেস ডেতে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছেন সেন্টার ফর জাস্টিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি। এবারের বিজনেস ডেতে মূল প্রবন্ধকার কেরি কেনেডি।
কেরি কেনেডি ছাড়াও গ্রামীণ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ও সিইও এন্ড্রিয়া জাং, যুক্তরাষ্ট্রের স্টোনিফিল্ড ফার্মসের সিইও গ্যারি হার্শবার্গ, চীন থেকে ৪৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল, ফ্রান্স থেকে ৩২ সদস্য, জাপানের ২৬ সদস্য, ভারতের ২৩ সদস্য, তাইওয়ান থেকে ৩৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৭ জন, হংকং থেকে ১৩ সদস্য, কম্বোডিয়া ১০, কাজাকাস্তানের ৯, মেক্সিকো থেকে ৯ জন, মালয়েশিয়া থেকে ৯ জন, সুইডেন থেকে ৯ জন, ইতালি, বাহরাইন, সেনেগাল, কলম্বিয়া, ভিয়েতনাম এবং গ্রামীণ ক্রেডিট এগ্রিকোল সংস্থা থেকে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল বিজনেস ডে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
দিনব্যাপী এ কর্মসূচিতে ৩১টি দেশের ২৭৫ জন অংশগ্রহণকারী যোগ দিয়েছেন। দেশি-বিদেশি মিলিয়ে অংশ নিয়েছেন এক হাজারজনের ওপরে।