ফেনী: নতুন বইয়ের ঘ্রাণ, মলাট এবং প্রচ্ছদ সবইতো অসাধারণ। ইচ্ছে হয় এক বসাতেই পড়ে ফেলি বইয়ের সব গল্প-কবিতা।
নতুন ক্লাসের নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতেই তো দিন কেটে যায়। নতুন বই নিয়ে এভাবেই নিজের উচ্ছ্বাসের কথা জানাচ্ছিল ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী মাদিহা কামাল লামিশা।
শনিবার (১ জানুয়ারি) সকালে ফেনীর বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলছে নতুন বই বিতরণ। আনুষ্ঠানিকভাবে বই উৎসব না হলেও শিক্ষার্থীদের চোখমুখে দেখা গেছে আনন্দ।
নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন বই উৎসব করার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বছরও তা হচ্ছে না। তবে বছরের প্রথমদিন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই বিতরণ কার্যক্রম চলছে।
মহামারি করোনার মধ্যেও সব ভয়-শঙ্কা কাটিয়ে নতুন বছরের প্রথম দিনে উপহার হিসেবে বিনামূল্যের পাঠ্যবই পাচ্ছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সকালে দেশের প্রতিটি স্কুল-মাদ্রাসায় পাঠ্যবই বিতরণ শুরু হয়েছে। প্রাথমিকে শিক্ষার্থীদের পক্ষে অভিভাবকেরা আর মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলে গিয়ে বই গ্রহণ করছেন। ফেনী শহরের একাধিক স্কুলে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত নাথ বলেন, করোনার কারণে ‘পাঠ্যপুস্তক উৎসব’ বাতিল হওয়ায় এবার ভিন্ন আঙ্গিকে বই বিতরণ করা হচ্ছে। তাই স্কুলমাঠে থাকছে না শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের সেই চিরাচরিত ভিড়। থাকছেন না স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অন্যরাও। শিক্ষকরাই বিতরণ করছেন বই।
ফেনী জেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, ফেনীতেও বছরের প্রথম দিনে নতুন বই পাচ্ছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের চার লাখের বেশি শিক্ষার্থী।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই পৌঁছে দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়গুলোতেও বই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ২৯ ডিসেম্বরের আগেই।
তিনি বলেন, জেলায় প্রাথমিকে চাহিদার শতভাগ বই এসেছে। তবে প্রাক-প্রাথমিকের ‘আমার বই’ নামে একটি বই এখনও আসেনি। সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে শিগগিরই বইটি পাওয়া যাবে। ।
সহকারি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম জানান, মাধ্যমিকে জেলায় চাহিদার বিপরীতে ৭০ শতাংশ বই এসেছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই চাহিদার শতভাগ বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
জেলার বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয়ে চাহিদার শতভাগ নতুন বই পৌঁছেছে।
জেলায় প্রাথমিক স্তরের সরকারি-বেসরকারি ও ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৯৮ হাজার এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ২ লাখ ১৬ হাজারের কিছু বেশি।