ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠী ও ব্যবসা খাতগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কারণেই বাংলাদেশ কোভিড মহামারির বড় শিকার হতে পারেনি। মার্কিন ম্যাগাজিন ফরচুনে লেখা এক নিবন্ধে এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে তিনি লিখেছেন, তার সরকার কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবার আগে মানুষের প্রয়োজনের দিকে গুরুত্ব দিয়ে জীবন ও জীবিকার মধ্যে সমন্বয় করেছে। এরপর এই মানুষেরা যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন সে ব্যবসাগুলোকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। ‘উই রাইজ ফ্রম কোভিড-১৯ বাই হেলপিং দ্য নিডিয়েস্ট ফার্স্ট’ শিরোনামের নিবন্ধটি ফরচুন ম্যাগাজিনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয় সোমবার।
এতে শেখ হাসিনা লিখেছেন, বাংলাদেশ বেশ ভালোভাবেই মহামারির অভিঘাত থেকে উৎরে অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারায় ফিরে আসতে পেরেছে। এ অভিযাত্রা শুরু হয়েছিল এক দশক আগে। মহামারির একেবারে শুরুতে অতি দরিদ্র, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক, বাস্তুচ্যুত এবং দুস্থ নারীদের হাতে ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আমরা খুব দ্রুত নগদ অর্থ এবং অন্যান্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি চার কোটি মানুষের হাতে, যা দেশের মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ। এই সহায়তা দেয়া হয়েছে ২৮টি পৃথক প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে। যার আওতায় মোট ২২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার দেয়া হয়েছে। যা আমাদের জিডিপি’র প্রায় ৬.২ শতাংশের সমান। এ ছাড়া টিকা ও অন্যান্য জরুরি প্রয়োজন মেটাতে আরও কয়েক বিলিয়ন ডলার ব্যয় করার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
নিবন্ধে তিনি লিখেন, করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট যদি বাংলাদেশে হানা দেয়, তখনো সরকার জনগণের প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করেই সবকিছু করবে। তার সরকারের নীতি হলো, দেশে কেউ ক্ষুধার্ত থাকবে না। এর আলোকে ১ কোটি ৬৮ লাখ পরিবারকে চাল, শিশুখাদ্য ও নগদ অর্থ দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে বয়স্ক প্রতিবন্ধী এবং দুস্থ ও স্বামী পরিত্যক্ত নারীরা যাতে নগদ সহায়তা পায়, তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
নিবন্ধের শেষে প্রধানমন্ত্রী লিখেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ। সেখান থেকে এ বছর নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনে অনেক পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। এখন বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় উত্তরণের পথেই রয়েছে। শত বছরের মধ্যে সব থেকে ভয়াবহ মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশ এটি করতে পারবে বলে নিজের আত্মবিশ্বাসের কথা লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিশ্বাস করেন, মূলত মানুষের মধ্যে বিনিয়োগই সব পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।