প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের বিদায় সংবর্ধনায় দাওয়াত না পাওয়ার অভিযোগ তুলে তা বর্জন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
বুধবার সকালে প্রধান বিচারপতিকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন প্রধান বিচারপতির জীবনী পাঠ করেন। এ সময় আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক, সিনিয়র আইনজীবীসহ কয়েক শ আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। তবে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা ছিলেন অনুপস্থিত।
অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরপরই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভবনে সংবাদ সম্মেলন ডেকে দাওয়াত না পাওয়ার অভিযোগ তোলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
বার সম্পাদক কাজল বলেন, সুপ্রিম কোর্টের চিরাচরিত রেওয়াজ অনুযায়ী কোনো প্রধান বিচারপতির বিদায় অনুষ্ঠানের কমপক্ষে তিন-চার দিন আগে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদককে অবহিত করা হয়। সমিতির সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। গতকাল মঙ্গলবার কর্মদিবস চলাকালীনও প্রধান বিচারপতির বিদায় অনুষ্ঠানের বিষয়ে সমিতিকে অবহিত করা হয়নি। এটি সমিতির প্রতিটি সদস্যের জন্য চরম অবজ্ঞার শামিল। গতকাল সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি আজ (বুধবার) সংবাদ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিষয়টি জানার পর রেজিস্ট্রার জেনারেল সন্ধ্যা ৭টা ১৭ মিনিটে সম্পাদককে ফোন করে প্রধান বিচারপতির বিদায় অনুষ্ঠান সম্পর্কে অবহিত করেন। তবে আমাদের করণীয় কী বা সদস্যদের আমন্ত্রণের বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘আজকের বিদায় অনুষ্ঠানে বিদায়ী প্রধান বিচারপতির কার্যকালে তার সফলতা-ব্যর্থতা, সমিতির সদস্যদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি বিষয়ে আমাদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে চেয়েছিলাম। সুপ্রিম কোর্টে বিচারপ্রার্থী মানুষের দুর্দশা, ঘুষ-দুর্নীতি-অনিয়ম, হাইকোর্টের জামিনাদেশ ও অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের অহরহ স্থগিতাদেশের কারণে সৃষ্ট মামলা জট ও বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি জানাতে চেয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সুকৌশলে আমাদেরকে সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এ ধরনের কর্মকা-ের প্রতিবাদ হিসেবে আমরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক বলেন, আব্দুল মতিন খসরুর মৃত্যুর পর থেকে সমিতির সভাপতি পদ শূন্য রয়েছে। সভাপতির অবর্তমানে সমিতির দুজন সহসভাপতিকে দিয়ে সমিতির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তারা হলেন সিনিয়র সহসভাপতি মো. জালাল উদ্দিন ও সহসভাপতি মোহাম্মদ শফিক উল্লাহ। যেকোনো অনুষ্ঠানে সভাপতির অবর্তমানে সিনিয়র সহসভাপতি দায়িত্ব পালন করবেন- এটিই সাংবিধানিক রীতি। অথচ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে ক্রমাগত অ্যাটর্নি জেনারেলকে বর্তমান সভাপতি হিসেবে সম্বোধন করা হয়ে থাকে। আগামী ১৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় সুপ্রিম কোর্ট দিবসের আমন্ত্রণপত্রেও অ্যাটর্নি জেনারেলকে সমিতির সভাপতি আখ্যায়িত করা হয়েছে। এটি রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট ও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও সমিতিকে দ্বিধাবিভক্ত করার অপপ্রয়াস।