বাংলা ও বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত দেশ বাংলাদেশ। বিজয়ের পর থেকেই দিবসটি শ্রদ্ধার সাথে পালন করে আসছে গোটা জাতি। বিজয়ের উপাখ্যান জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এবারের বিজয় দিবসে আজ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। পরের দিন শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
করোনা মহামারীর কারণে জাতীয় স্মৃতিসৌধ বন্ধ থাকায় এবার দু’মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে স্মৃতিসৌধ কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে পুরো এলাকা ধুয়ে মুছে রং-তুলির আঁচড়ে রাঙিয়ে তোলা হয়েছে। নানা রঙের বাহারি ফুলের চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে স্মৃতিসৌধের সবুজ চত্বর। চত্বরের সিঁড়ি ও নানা স্থাপনায় পড়েছে রং-তুলির আঁচড়। আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে স্মৃতিসৌধের রাস্তাসহ পুরো এলাকা। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতে চারদিকে স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। বসানো হয়েছে পুলিশ কন্ট্রোল রুম ও নিরাপত্তা চৌকি। প্রতি মোড়ে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট।
গণপূর্ত বিভাগের সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে প্রায় বিগত দুই মাস ধরে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু হয়েছে। ফুল দিয়ে সাজানো, লেক সংস্কার, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ সব কাজ পুরোপুরি শেষ। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রস্তুত আছে। তবে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৫ ডিসেম্বর ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশে আসবেন। আমরা আশা করছি এদিনই দুপুরে শহীদদের সম্মানে সে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এ জন্য দুই দিন আগেই আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। আর এ কারণে গত ১ ডিসেম্বর থেকেই পুরো সৌধ এলাকায় সিকিউরিটি ডেপ্লয় হয়েছে। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিজয় উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে কাজ করে যাচ্ছেন। নিরাপত্তায় গোটা সাভার ঘিরেই নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
করোনার কারণে এমনিতেই স্মৃতিসৌধে দর্শণার্থী প্রবেশে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি প্রস্তুতি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন এবং পরিদর্শন করছেন জাতীয় স্মৃতিসৌধ। শরীফ আহমেদ জানান, অতিথিদের পদচারণে মুখর থাকবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ অঙ্গন। যে কারণে স্মৃতিসৌধ এলাকার চারপাশ ঘিরে তৈরি করা হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তাবলয়। মূলত জাতীয় স্মৃতিসৌধের কর্মসূচি দিয়েই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সফরের আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হবে। তাই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে বেশ ব্যস্ত দিন অতিক্রম করছেন পরিচ্ছন্নকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করতে স্মৃতিসৌধ এলাকাজুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা, নিরাপত্তা চৌকির ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।