গাজীপুর: গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভায় মেয়র পদে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে বিএনপির প্রার্থীর কাছে পরাজয়ের পর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাসেল। সবশেষ তিনি এক ভিডিওবার্তায় নানা অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন। বলেছেন, কার কারণে, কার মদতে কালিয়াকৈরের ইতিহাসে এমন একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় রচিত হলো তা বের করা দরকার।
কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌরসভার মেয়র পদে পরাজিত নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেল এক ভিডিও বার্তায় বলেন, বিএনপির প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করে নৌকা ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে। কালিয়াকৈর এর আটটার মধ্যে সাতটিতেই নৌকা ডোবানো হয়েছে। কার কারণে প্রশাসন নগ্ন ভূমিকা পালন করেছে তার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। এক অদৃশ্য শক্তির ছায়ায় এখানে প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে। কার ছত্রছায়ায়, কোন উদ্দেশ্যে এমন নির্বাচন হলো যেখানে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি সাধারণ জনগণ।
আমরা স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণাও করতে পারেনি। নির্বাচনের আগে শুক্রবার শেষ আমাদের নির্বাচনী মিছিলে লাঠিচার্জ করে নারীকর্মীসহ অনেককে আহত করা হয়েছে। প্রার্থীর ব্যাচ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অদৃশ্য শক্তির ছায়ায় কালিয়াকৈরের ইতিহাসে জঘন্যতম অধ্যায় রচিত হলো। নির্বাচনের সময় প্রার্থী হিসেবে প্রতিটি কেন্দ্রে যাওয়ার অনুমতি থাকলেও আমাকে বাধা দেয়া হয়েছে। কর্মীদের নৌকার ব্যাজ ছিঁড়ে ফেলা দেয়া হয়েছে।
নীলনকশার একটি নির্বাচন এখানে হয়েছে। যে নির্বাচনে জনগণের রায় প্রতিফলিত হয়নি। নির্বাচনের দিন ইভিএম মেশিন হ্যাকিং হয়েছে। অকার্যকর রাখা হয়েছে। কারখানাগুলির ছুটি না দেয়ায়, তারা মাত্র এক ঘণ্টার ছুটি নিয়ে ভোট দিতে এসে কয়েক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট দিতে পারেনি। নির্বাচনটি একটি প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত করা হয়। নির্বাচনের দিন প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন একপেশে আচরণ দেখিয়েছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে এজেন্ট ও নির্বাচনে কর্মীরা অত্যাচার সহ্য করেছে অদৃশ্য শক্তির ইশারায়। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও জেলা যুগ্ম আহবায়ক তিনি (বিজয়ী মেয়র) অনেক মামলার আসামি। তাকে নির্বাচিত করার জন্য প্রশাসনের যে ভূমিকা ছিল, সেখানে সুষ্ঠ নির্বাচন তো দূরের কথা আমরা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ দাঁড়াতেও পারেনি।
এখনো থানায় বসে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমাদের নেতা-কর্মীদের নানা হুমকি দিচ্ছে। কি উদ্দেশ্যে, কার ইশারায় এমন একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি হলো, তার জন্য তিনি বারবার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।
উল্লেখ্য, গত উপজেলা নির্বাচনেও রেজাউল করিম রাসেল নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী কাছে পরাজিত হন। ওই নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সিকদার জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সমর্থিত প্রার্থী বলেই মাঠে পরিচিতি পেয়েছিলেন।