রাজধানীর আদাবরে খালার বাসা থেকে গত বৃহস্পতিবার সকালে বেরিয়ে যাওয়া তিন বোন নিখোঁজ নয়। তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে অসুস্থ বাবাকে দেখতে যশোরে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে র্যাব।
এদিকে শুক্রবার বিকেলে তিন বোনকে যশোরের চাঁদপাড়া পশ্চিম পাড়া থেকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তাদের ঢাকার আদাবর থানায় আনা হচ্ছে।
যশোর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রুপম কুমার সরকার বলেন, তিন বোন তাদের মা–বাবার সঙ্গে ঢাকার উত্তরার লেকসিটি কনকর্ডে ভাড়া থাকতেন। প্রায় ৯ বছর আগে তাদের মা–বাবা আলাদা হয়ে যান। এরপর থেকে তিন বোন তাদের মায়ের সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন। মা মারা যাওয়ার পর তারা দুই খালার বাসায় থাকতেন। তাদের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হতো না। তিন বোন পরামর্শ করেই যশোরে বাবার বাড়িতে চলে আসেন।
এদিকে র্যাব-২–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু নাঈম মো. তালাত বলেন, তিন বোন খালার বাসায় থাকত। দুজনের এসএসসি পরীক্ষা চলছিল। এরই মধ্যে তারা জানতে পারে, বাবা অসুস্থ। বাসার কাউকে কিছু না জানিয়ে তারা যশোরে যায়। আমরা ভিডিও কলে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের চাচাদের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। ভিডিও কলে তারা তাদের খালার সঙ্গেও কথা বলেছে। এখন আমরা নিশ্চিত হয়েছি তারা নিখোঁজ হয়নি।
খালাকে বিষয়টি তারা জানায়নি কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাব-২ এর অধিনায়ক বলেন, আমরা এ বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করব। আমরা প্রথম থেকেই তাদের নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম। কারণ, এই বয়সে অনেক তরুণী টিকটকের ফাঁদে পড়ে ঘর ছাড়ছেন। তারা এমন কোনো ফাঁদে পড়েছে কি না, সেই বিষয়টিকেই আমরা গুরুত্ব দিচ্ছিলাম। তবে এখন আমরা নিশ্চিত, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় র্যাব জানায়, ২০১৩ সালে মা মারা যাওয়ার পর থেকে তিন বোন খালার বাসায় বসবাস করছিল। গত বৃহস্পতিবার তাদের খালা ভীত হয়ে আদাবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ঘটনার ছায়া তদন্তে নেমে র্যাব তাদের অবস্থান শনাক্ত করে। তাদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথাও বলে তারা। নিকটাত্মীয়রা উদ্বিগ্ন থাকায় যশোরের কোতোয়ালি থানায় যোগাযোগ করে র্যাব।
তিন বোনের খোঁজ না পেয়ে গতকাল আদাবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তাদের খালা সাজিয়া নওরীন। জিডির তথ্য অনুযায়ী, ‘নিখোঁজ’ তিন বোনের বয়স ১৬ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে দুজন এসএসসি পরীক্ষার্থী। গতকাল বেলা ১১টার দিকে তারা বাসা থেকে বের হয়।
সাজিয়া নওরীন জানান, তিনজনই তার বড় বোনের মেয়ে। তিন বছর আগে তার বড় বোন মারা যান। বড় বোনের স্বামী পরে আবার বিয়ে করেন। ওই তিন বোন খিলগাঁওয়ে তাদের আরেক খালার বাসায় থাকে। তবে এসএসসি পরীক্ষার্থী দুই বোনের পরীক্ষা কেন্দ্র ধানমন্ডি গার্লস হাইস্কুল হওয়ায় তারা সবাই তার আদাবরের বাসায় অবস্থান করছিল।