বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদার জিয়ার মুক্তি ও তার বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে আগামীকাল শনিবার গণ অনশন কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।
রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সকাল নয়টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত এ গণঅনশন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। এতে দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে অংশ নিয়ে একাত্মতা পোষণ করার আহবান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রাজধানী ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি এনপিপি ১৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আলোচনা সভায় এ আহবান জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আগামীকাল বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তার বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে গণঅনশনের ডাক দিয়েছি। আমরা আশা করবো সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা আমাদের এই গণ অনশন কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষণ করবেন। আমরা আপনাদের আহবান জানাচ্ছি দয়া করে আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসবেন। গণঅনশন কর্মসূচির জন্য আমরা অনেক জায়গায়ই চেয়েছি কিন্তু আমাদের কোথাও জায়গা দেয়া হয়নি। আর আমাদের এই কর্মসূচি থেকেই পরবর্তী প্রোগ্রাম আমরা ঘোষণা করব।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে তার পরিবার সরকারের কাছে আবেদন করেছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল আইনমন্ত্রী বলেছেন, এতে আইনের কোনো সুযোগ নেই তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য। এটা ডাহা মিথ্যা কথা। সরকার চাইলে তাকে মুক্তি দিতে পারেন, সরকার চাইলে তাকে বিদেশে পাঠাতে পারেন। কিন্তু তাদের লক্ষ্য একটাই বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক থেকে সরিয়ে দিয়ে এবং এ দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্যই তারা তাকে বিদেশ যেতে দিতে চাচ্ছে না।
খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আমরা জানি না কতোটা গুরুতর অসুস্থ বেগম জিয়া। আমরা ডাক্তারদের ভাষা বুঝিনা। সাধারণ মানুষ হিসেবে যেটা বুঝি তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। আমি জানিনা পার্লামেন্টে যখন প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন কোন রাজনৈতিক ভাষায় তিনি কথা বলেন। কোন শিষ্টাচারের মধ্যে কথা বলেন। বেগম খালেদা জিয়া ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন। তিনি এদেশের উড়ে এসে জুড়ে বসেননি। একমাত্র অহংকার, প্রতিশোধ এবং দাম্ভিকতার কারণেই বেগম খালেদা জিয়াকে আজকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি একটু কথা বলতে চাই দেশকে বাঁচাতে হলে, আমাদের স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হলে, আমাদের জনগণকে রক্ষা করতে হলে, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো ফিরিয়ে আনতে হলে ওই যে বাতিঘর, যে বাতিঘরের দিকে আমরা তাকিয়ে আছি, সেই বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থ করতে হবে, তাকে মুক্ত করতে হবে। তার সঙ্গেই আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জড়িত আছে। কারণ গণতন্ত্র এবং বেগম খালেদা জিয়াকে আলাদা করে দেখার কোন সুযোগ নেই।
আগামীর আন্দোলন সংগ্রামে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসুন আমরা এই ভয়াবহ দানব সরকারকে সরানোর জন্য সকলে ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ লক্ষ্যমাত্রা এবং গণঅভ্যুত্থান ছাড়া এই দানবীয় সরকারকে হটানো সম্ভব নয়। অনেক দলীয় নেতারা বলেছেন যুগপৎ, এক মঞ্চ এসব বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে। আমরা যার যার জায়গা থেকে আন্দোলন শুরু করি।
এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদ উজ্জামান ফরহাদ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এড. সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপা একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, এলডিপির একাংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালাম, গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরসহ ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।