চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর যে দাবি করেছে বিএনপি তা আইন বইয়ে নেই বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে বিএনপির সংসদ সদস্য জি এম সিরাজের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, আইনের শাসন যেখানে আছে, সেখানে তিনি যথেচ্ছ ব্যবহার করতে পারেন না। বিএনপি যে দাবি করছে, তা আইনের বইয়ে নেই।
তিনি বলেন, বিএনপি আমাকে যত খুশি গালি দিতে পারে। তাতে আমার কিছু আসে–যায় না। আমি আইন মোতাবেক চলব।
এদিন পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জি এম সিরাজ খালেদা জিয়াকে মানবিক দিক বিবেচনায় দু-এক দিনের মধ্যেই চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানান। এটি না হলে সংসদ থেকে পদত্যাগ করারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বিএনপির এই এমপি সংসদে বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানো না হলে এবং অবস্থা চরম হলে দলীয় সিদ্ধান্তে বিএনপির পক্ষে এই সংসদে থাকা হয়তো সম্ভব হবে না। খালেদা জিয়ার কিছু হলে এর দায় আওয়ামী লীগকে নিতে হবে।
বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন, দণ্ডিত হয়ে জামিন নিয়ে বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার নজির আছে। ১৯৭৯ সালে আ স ম আবদুর রব সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পরও চিকিৎসার জন্য জার্মানি গিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতা নাসিম দুদকের মামলায় দণ্ডিত হয়েও ২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য সুযোগ পান।
জি এম সিরাজ বলেন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কেন বিদেশে যেতে দেয়া হবে না? এটা তার মৌলিক অধিকার। এই বক্তব্যের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আইনের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। মানবিক কারণে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত রেখে ছয় মাস পরে বাড়ানো হয়েছে।
বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে অনুমতি দেয়ার বিধান আইনে নেই জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি তো দেখিয়েছি যে বাংলাদেশের আইনের বইয়ে এটা নাই। ওনারা যদি এটা দেখাতে পারেন, তাহলে তো আমরা এটা বিবেচনা করতে পারি। কিন্তু এটা আইনের বইয়ে নাই। ওনারও দেখাতে পারবেন না, বিবেচনার প্রশ্ন আসে না।’ সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা তার এই বক্তব্যের সমর্থনে টেবিল চাপড়ান।
আইনমন্ত্রী বলেন, ২০০৭-০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিদেশ যেতে দেয়া হয়েছে, এটা অসত্য। প্রধানমন্ত্রী কখনো সাজাপ্রাপ্ত হননি। আ স ম আবদুর রবকে যখন পাঠানো হয়েছিল, তখন দেশে ছিল মার্শাল ল। মার্শাল লর ধারা ফৌজদারি কার্যবিধির ধারার সাথে চলে না। ওনারা যথেচ্ছ করেছেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, আজকে আইনের শাসন যেখানে আছে, সেখানে আমি যথেচ্ছ করতে পারি না। এটা হচ্ছে প্রকৃত ঘটনা।
আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়াকে সঠিকভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ৪০১ ধারায় কোনো সুযোগ নেই একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামির নিষ্পত্তিকৃত আবেদন আবার বিবেচনা করার।