আজ শিশুসাহিত্যিক খায়রুননেসা রিমির জন্মদিন

সাহিত্য ও সাংস্কৃতি

ঢাকা: আজ ১৩ নভেম্বর শিশুসাহিত্যিক, কবি,লেখক,শিক্ষক ও উদ্যোক্তা তৈরির কারিগর খায়রুননেসা রিমির জন্মদিন।
১৯৭৬ সালের এই দিনে শরিয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ থানার চরভাগা গ্রামের সম্ভ্রান্ত ঢালী বাড়িতে এই গুণী লেখকের জন্ম হয়।

পিতা ইঞ্জিনিয়ার মো.আব্দুল্লাহ ঢালী।মাতা নূরজাহান বেগম।লিখতে ভালোবাসতেন ছোটবেলা থেকেই।তিনি হাইস্কুল ও কলেজ জীবনে শরিয়তপুরের সাহিত্যাঙ্গনে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৯০ সালে স্কুল জীবন থেকেই তিনি জাতীয় দৈনিকে লিখতে শুরু করেন।এরপরে ভোরের কাগজের পাঠক ফোরামে লিখে হাত পাকান এই গুণী লেখক।

সেই সাথে লিখতে থাকেন ভোরের কাগজের নারী পাতা অন্যপক্ষেও।পাশাপাশি দৈনিক ইত্তেফাকের নারীপাতা মহিলা অঙ্গনেও নিয়মিতভাবে ফিচার লিখতে থাকেন। সময়টা ১৯৯৭-২০০৮ সাল পর্যন্ত।

দৈনিক প্রথম আলোর বন্ধুসভাতেও লিখেছেন বেশ কবছর। ২০০৫ সালে শিরিন প্রকাশনী থেকে তার প্রথম গল্প গ্রন্থ “নষ্ট দিনের কষ্ট স্মৃতি”প্রকাশিত হয়। এই গল্প গ্রন্থের ব্যাপক সফলতার পরে তার পরের বছরই ঐ একই প্রকাশনী থেকে ২০০৬ সালে প্রকাশিত হয় শিশু সাহিত্য “পরীর দেশে যেতে হলে” এরপর দীর্ঘ সাতটি বছর সংসার জীবন ও কর্মজীবনের প্রচণ্ড ব্যস্ততার কারণে ইতি টানেন সাহিত্য চর্চা থেকে।সমস্ত ব্যস্ততা কাটিয়ে ২০১৪ সালে আবার তিনি লেখার জগতে ফিরে আসেন।ঐ বছরই “হাতে খড়ি “প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ
” চুল্লাবুড়ির খপ্পরে”।এরপরে তিনি আর পিছন ফিরে তাকাননি।সাংসারিক ও কর্ম জীবনের অতি ব্যস্ততার কারণে ঝরে যাওয়া সাতটি বছরকে পুষিয়ে নিতেই তিনি একের পর এক লিখে যান অসংখ্য কবিতা,উপন্যাস ও গল্প। ২০১৫ সালে শিখা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় তার আরও একটি শিশুতোষ গল্প গ্রন্থ “ভূত ছানার বিদ্যা অর্জন” ও একটি ভ্রমণ কাহিনি “দারুচিনি দ্বীপের টানে”। এই দুইটি বইয়ের ব্যাপক সফলতার পরে এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে ঐ একই প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় কিশোর উপন্যাস ” নয়শ’ ভূতের কাণ্ড”।

২০১৭ সালে গ্রাফোসম্যান প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় একই সাথে তিনটি বই।”শালিক কন্যার বিয়ে”,রোদেলার জন্মদিন ও “মার্বেল ভূত”।২০১৮ সালে ঐ একই প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় বড়দের কাব্যগ্রন্থ ” মন রাঙে না ফাগুনে” ও জীবনী গ্রন্থ “অধ্যক্ষ হামিদা আলী”।

২০১৯ সালে গ্রাফোসম্যান প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় উপন্যাস “আত্মিক প্রেম”। ঐ একই বছর বিশ্বসাহিত্য ভবন থেকে প্রকাশিত হয় ” ভূতকন্যা নীলাবতী”।

২০২০ সালে বিশ্ব সাহিত্য ভবন থেকে প্রকাশিত হয় কিশোর উপন্যাস”ভূতং ভূতের কারসাজি” ও লন্ডন প্রবাসী প্রকাশক ওলিউর রহমানের সম্পাদনায় তিন দেশের সাত নারী কবির কবিতা নিয়ে “সপ্তর্ষি” নামক একটি যৌথ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়।

২০২১ সালে প্রিয় প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় রোমান্টিক কাব্যগ্রন্থ “যুবক তোমার জন্য” এবং তারাই সম্পাদনায় গল্পগ্রন্থ “উদ্যোক্তাদের গল্প”

এই গুণী লেখকের পুরষ্কারসমূহ ঃ

# কাব্য সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পোয়েটস ক্লাব কর্তৃক আয়োজিত
” মহান জাতিসংঘ দিবস সম্মাননা ”
পান এই গুণী কবি।

# শিশু সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য সমতটের কাগজ কর্তৃক প্রদত্ত
” গুণীজন সম্মাননা ২০১৮ ”
পান এই গুণী শিশুসাহিত্যিক।

# ঐ একই বছর ২০১৮ সালে জীবনী গ্রন্থে
“জাতীয় সাহিত্য সম্মেলন
সম্মাননা পদক ”
পান এই গুণী লেখক।

# ২০১৯ সালে শিশু সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য “আর জে এফ সম্মাননা পদক” পান এই গুণী
শিশুসাহিত্যিক।

এমনই একজন গুনী মানুষ “স্বপ্ন পূরণ ” নামে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য একটি প্লাটফর্ম তৈরি করেছেন।যেখানে ১৪ হাজার সদস্যের স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব তিনি নিয়েছেন।

স্বপ্ন পূরণ গ্রুপের সদস্যদের স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তার আশপাশের অনেক বেকার নারীর বাসায় গিয়ে রান্নার পেইজ খুলে দিয়ে তার রান্না দিয়েই তাকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। তার বর্তমান স্বপ্ন বেকার নারীদেরকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা।বাংলার সকল নারী যখন স্বাবলম্বী হয়ে গড়ে উঠবে তখনি সত্যিকারের নারী মুক্তি আসবে বলে তিনি মনে করেন। তরুণ উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যেই তিনি “স্বপ্ন পূরণ “নামে একটি গ্রুপ তৈরি করেছেন।তরুণ উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার জন্যই স্বপ্ন পূরণ গ্রুপের ২০ জন নারীকে ” স্বপ্ন পূরণ উদ্যেক্তা সম্মাননা “প্রদান করেন গত ৬ নভেম্বর, ২০২১ এ। এভাবেই তিনি লেখালেখি ও শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

প্রতি বছর বই মেলায় এই গুণী লেখকের কমপক্ষে ২/৩টি করে বই প্রকাশিত হয়।ইতিমধ্যেই তিনি তার চমৎকার লেখনী দ্বারা পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।লেখিকা বর্তমানে ঢাকা সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজের বারিধারা শাখায় সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।

আজ এই গুণী লেখকের জন্মদিন। প্রিয় লেখকের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *