কুমিল্লা: কুমিল্লা নগরীর নানুয়া দীঘিরপাড়ে দর্পণ সংঘের অস্থায়ী পূজামণ্ডপে কোরআন রেখে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও ভাঙচুরের মামলায় সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর পিএস মইনুদ্দিন আহমেদ বাবুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে রাঙামাটির সাজেক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল আজিম। এ ছাড়া রোমান হাসান ও রবিউল ইসলাম নামে আরও দুজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ওসি। তারা কুমিল্লা মহানগর যুবদলের নেতা।
ওসি আনোয়ারুল আজিম জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল সাজেকের একটি রিসোর্ট থেকে বাবুকে আটক করা হয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং মন্দির ভাঙচুর ও সহিংসতার দুটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া কুমিল্লা মহানগর যুবদল নেতা রোমান হাসান
ও রবিউল ইসলামকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে গতকাল বেলা আড়াইটায় তাদের কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইরফানুল হক চৌধুরীর আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ম-পে কোরআন রাখার ঘটনায় ইকবাল হোসেন প্রধান অভিযুক্ত হলেও ওইদিন সকালে সহিংসতা ছড়িয়ে দিতে তৎপর ছিলেন বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে মেয়রের পিএস বাবু অন্যতম। ঘটনার দিন তাকে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল বলে দাবি পুলিশের। ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাবুকে সিসিটিভির বিভিন্ন ফুটেজেও দেখা গেছে। বিভিন্ন সময় তাকে সহিংসতার নেতৃত্ব দিতেও দেখা যায়। ওই সব ফুটেজ পর্যালোচনা করে এবং বিভিন্ন প্রমাণসাপেক্ষে বাবুকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, কুমিল্লার ওই পূজাম-পে গত ১৩ অক্টোবর হামলার ঘটনায় ভাঙচুর নাশকতার অভিযোগে পুলিশ এবং পূজা ব্যবস্থাপনার আহ্বায়ক তরুণ কান্তি মোদক মিথুন বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। তবে ঘটনার দিন বিকালে থেকেই বাবু পলাতক ছিলেন। তার বাসা ছিল তালাবদ্ধ। কোথাও তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম তার খোঁজে দীর্ঘদিন বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। পরে তাকে সাজেকের একটি রিসোর্টে পাওয়া যায়। মহিউদ্দিন আহমেদ বাবু কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ জাহাঙ্গীরের ছেলে।