নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় গৃহবধূকে নিজ ঘরে ধর্ষণ চেষ্টায় বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
বেগমগঞ্জ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছাড়া অন্যরা হলেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মফিজুল ইসলাম, স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ ও চৌকিদার আলী আসগর।
ঘটনাটি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, অনীক আর হক ও আব্দুল্লাহ আল মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
রায়ের বিষয়ে ব্যারিস্টার অনিক আর হক বলেন, তৎকালীন ওসি, একজন এসআই ও এএসআইকে বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং চৌকিদারকে বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে এলজিআরডি সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে গত বছরের ৫ অক্টোবর ঘটনাটি আদালতের নজরে আনার পর বিবস্ত্র করার ফুটেজ বিষয়টি অনলাইন ফ্ল্যাটফর্ম থেকে সরাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
সিডি বা পেনড্রাইভে কপি রেখে ভিডিও ফুটেজ সরাতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ দেয়া হয়।
এছাড়া ওই নারীর পরিবারকে সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয়া হয়। একইসাথে ঘটনার বিষয়ে ভিকটিমের বক্তব্য নিতে পুলিশের কোনো অবহেলা আছে কিনা, তা অনুসন্ধান করতে একটি কমিটি করে দিয়েছিলেন আদালত। কমিটিকে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
পরে আদালতের নির্দেশে কমিটির প্রধান ছিলেন চৌমুহনী সরকারি এস এ কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাশার। সদস্য ছিলেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসরাত সাদমীন এবং জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী।
আদালতে ওই কমিটির দেয়া প্রতিবেদনে অবহেলা পাওয়ায় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ কর্মকর্তা ও স্থানীয় চৌকিদারের বিষয়ে আদালত যৌক্তিক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিতে পারে বলে মত দেয়া হয়। এরপর সেই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় দিলেন হাইকোর্ট।
সূত্র : বাসস