মিয়ানমারের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ভারী অস্ত্রসহ সেনা মোতায়েনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে- সেখানে ব্যাপক নৃশংসতা হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ। গত ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর থেকেই সেখানে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
শুক্রবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্ট উপস্থাপনকালে অ্যান্ড্রুজ বলেন, ‘আমি তথ্য পেয়েছি যে মিয়ানমারের দুর্গম উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে হাজার হাজার সৈন্যসহ ভারী অস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছে। এই তথ্যগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, জান্তা সরকার মানবতার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধের প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
গত ১ ফেব্রুয়ারি সু চি সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় বসে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে সাধারণ মানুষের ওপর দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে জান্তা সরকার। জান্তা বিরোধীদের ওপর চালানো রক্তক্ষয়ী অভিযানে এক হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। বিক্ষোভের শুরু থেকে গ্রেপ্তারের সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়েছে।
অ্যান্ড্রুজ বলেন, ‘আমাদের সকলের প্রস্তুত থাকা উচিত, যেমন মিয়ানমারের এই অংশের লোকেরা আরও বেশি গণহত্যার মুখোমুখি। আমি আশা করছি আমার আশঙ্কা ভুল প্রমাণিত হোক।’
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে পুলিশ চেকপোস্টে সহিংসতার পর বহুদিন ধরে চালানো রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হত্যা ও ধর্ষণ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছে। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে উল্লেখ করেছে। একে নিধনযজ্ঞ বলেছে যুক্তরাষ্ট্রও।