চট্টগ্রামে মণ্ডপে হামলা, হরতালের ডাক

Slider চট্টগ্রাম


চট্টগ্রামের জেএমসেন হলে পূজা মণ্ডপে হামলার ঘটনা ঘটেছে। কুমিল্লার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে একদল লোক পূজা মণ্ডপে এই হামলা করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার পর প্রতিমা বিসর্জন না দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হলেও পরে এই ঘোষণা থেকে সরে আসেন চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ। এদিকে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত আগামীকাল শনিবার চট্টগ্রামে আধাবেলা হরতালের ডাক দিয়েছেন। আজ শুক্রবার দুপুরে হামলার এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে জুমার নামাজ শেষে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ গেইটে একদল লোক ‘কুমিল্লার ঘটনার প্রতিবাদ’ জানিয়ে সমাবেশ করে। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে জেএমসেন হলের দিকে এগিয়ে যায়। মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের বেস্টনি দেওয়া থাকলেও তারা তা ভেঙে তারা এগিয়ে যেতে থাকে। জেএমসেন হল প্রাঙ্গণের প্রধান ফটক আগে থেকে বন্ধ থাকায় তারা গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় তারা ভেতরে ঢিল ছোড়ে এবং পূজার জন্য সড়কে এবং আশপাশের দেয়ালে টাঙ্গানো বিভিন্ন ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। পুলিশ এ সময় টিয়ার শেল ছুড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। হামলাকারীরা এ সময় জেএম সেন হলের পাশ দিয়ে এবং চেরাগী পাহাড় দিয়ে পালিয়ে যায়। এদিকে জেএমসেন হলে হামলার পর পূজা কমিটির নেতা-কর্মীরা সড়কে এসে অবস্থান নিলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

চট্টগ্রামের জেএমসেন হলের এ পূজার আয়োজন করে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ। হামলার পর পরিষদের নেতারা ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত’ প্রতিমা বিসর্জন না দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান। বেলা ৩টার দিকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত জেএমসেন হলে মোড়ে এসে পূজা উদযাপন পরিষদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এ ছাড়াও জেএমসেন হল মোড়ে টানা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত হরতালের ডাক দেন। পরে বিকেল ৫টার পর প্রতিমা বিসর্জন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন পূজা উদযাপন পরিষদ।

নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনও বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে জেএমসেন হলে আসেন পরিস্থিতি দেখতে। এদিকে ঘটনাস্থলে থাকা নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) বিজয় বসাক হামলার ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য না করে শুধু বলেন, ‘তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।’

চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশীষ ভট্টাচার্য্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতি বছর ১১টা থেকে বিসর্জনের কাজ শুরু হয়। এবার সরকারি নির্দেশনা ছিল নামাজের জন্য বেলা আড়াইটার পর থেকে পূজা মণ্ডপ থেকে বিসর্জনের জন্য বের হওয়ার। সেজন্য আমরা মণ্ডপে অপেক্ষা করে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করছিলাম। ঠিক এ সময় আমাদের এখানে হামলা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, দুর্গাপূজার মধ্যে কুমিল্লার একটি মন্দিরে কোরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে বুধবার কয়েকটি মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর চালানো হয়। এর পর দেশের বিভিন্ন জেলায় মন্দিরে ও পূজা মণ্ডপে হামলা হয়। তা ঠেকাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও বাঁধে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *