ঠাকুরগাঁওয়ের সন্তান ড. আনোয়ার খসরু পারভেজ আন্তর্জাতিক সংস্থা এডি সাইন্টিফিক ইনডেক্সে বিশ্বসেরা বিজ্ঞানী ও গবেষকদের তালিকায় এই বছর মর্যাদাপূর্ণ স্থান লাভ করেছেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের গবেষক ও অধ্যাপক এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করেছেন।
এই র্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে বিশ্বের ৭ লাখ ৮ হাজার ৪৮০ জন, এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৬২ জন, বাংলাদেশের ১৭৯১ জন গবেষকের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চলতি বছরসহ গত ৫ বছরের সাইটেশন আমলে নেয়া হয়।
এদের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক ড. আনোয়ার খসরু। তার প্রকাশিত আর্টিকেল, সাইটেশন ও অন্যান্য ইনডেক্সের বিবেচনায় এই তালিকায় স্থান পেয়েছে।
অটোমোবাইল ক্যাটালিস্ট, এনোড ক্যাটালিস্ট, সোলার সেল, লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারী, হেড ডিস্ক ড্রাইভ ইন্টারফেস ইত্যাদি গবেষণা ক্ষেত্রে তার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গবেষণা আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
ড. আনোয়ার খসরু সুমন বলেন, সকলের দোয়া আর আল্লাহর ইচ্ছায় চেষ্টা করছি। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ও মানব কল্যাণে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। আমাদের দেশে মৌলিক গবেষণার জন্য নিবেদিত গবেষণা অন্তপ্রাণ গবেষক আছে। শুধু উন্নত মানের ল্যাব ও পরিবেশ প্রয়োজন।
তিনি ১৯৭৩ সালের ২৮ অক্টোবর ঠাকুরগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। জীবনের দীর্ঘ ২২ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। ঠাকুরগাঁও জেলা স্কুল থেকে এসএসসি ও ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ থেকে বিএসসি ও এমএসসি সম্পন্ন করেন।
২০০৩ সালে জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জীবপ্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ইউনেস্কো আইসি-বায়োটেক পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেছেন।
প্রথম ২০০৫ সালে পিএইচডি করেছেন মাইক্রোবায়োলজি বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, দ্বিতীয়বার ২০০৮ সালে মনবুকাগাকুশো স্কলারশিপ নিয়ে পিএইচডি করেন জাপান ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সে টোকুশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর ইরাসমাস মুন্ডুস স্কলারশিপ নিয়ে পোস্ট ডক্টোরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন ইতালির মিলান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
একজন পেশাদার দক্ষ মাইক্রোবায়োলজিস্ট হিসেবে গবেষণা করছেন কোভিড-১৯, ডেঙ্গু, আণবিক ওষুধ ও সংক্রামক রোগ, পরজীবী, ক্লিনিক্যাল এবং পরিবেশগত মাইক্রোবায়োলজিসহ উদীয়মান সংক্রামক রোগ নিয়ে। আন্তর্জাতিক কোলাবোরেটিভ গবেষণার সাথেও যুক্ত আছেন তিনি। তার বুক চ্যাপ্টারসহ দেশী-বিদেশী ৮০টিরও অধিক প্রকাশনা রয়েছে।
তিনি বিশেষত কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড পয়েন্ট-অফ কেয়ারে আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার স্থাপনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গত এক বছর ধরে সরকারিভাবে অংশ নিয়েছেন। এছাড়া ঠাকুরগাঁও টিবি ক্লিনিক ও পাবনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবেও কাজ করেছেন।
চলতি বছর একুশে বই মেলায় প্রকাশিত তার লেখা ‘বাংলাদেশের করোনা প্রেক্ষাপট ও চালচিত্র’ বইটি নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওসহ সারা দেশের মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে ও ইতোমধ্যেই ড. আনোয়ার খসরু পারভেজ (সুমন) অনেকের মাঝে সমাদৃত ও অভিনন্দিত হয়েছেন।