শেষ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনের প্রথম ‘বলি’ হলো স্কটল্যান্ড। বিশ্বকাপ শুরুর আগে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন নিয়ে আলোচনার শেষ ছিল না। কিন্তু বিশ্বকাপের প্রথম পাঁচ ম্যাচে ৩০০ পেরোনো (আগে ব্যাটিং) স্কোর কন্ডিশন নিয়ে আলোচনা অনেকটাই থামিয়ে দেয়।
তবে ১৭ ফেব্রুয়ারি ডানেডিনে বিশ্বকাপের ষষ্ঠ ম্যাচে পুল ‘এ’র ম্যাচে কিউই পেসারদের গতি আর সুইংয়ের জবাবই দিতে পারেননি স্কটিশ ব্যাটসম্যানরা। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৩৬.২ ওভারেই ১৪২ রানে গুটিয়ে যায় স্কটল্যান্ড। ব্যক্তিগত কোনো স্কোর না করেই সাজঘরে ফেরেন পাঁচ স্কটিশ ব্যাটসম্যান।
তবে সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাত উইকেট হারাতে হয় নিউজিল্যান্ডকে। শেষ পর্যন্ত ২৫ ওভার বাকি থাকতেই জয় পায় নিউজিল্যান্ড।
গতি আর সুইংয়ে দুঃস্বপ্নের শুরু স্কটিশদের
ডানেডিনে ব্যাট করতে নেমেই নিউজিল্যান্ডের গতি আর সুইংয়ে বিধ্বস্ত হয়ে যায় স্কটল্যান্ডের টপ অর্ডার। প্রথম ওভারের তৃতীয় এবং চতুর্থ বলেই স্কটিশ ওপেনার ম্যাকলিউড এবং হামিশ গার্ডিনারকে ইনসুয়িংয়ে এলবির ফাঁদে ফেলেন নিউজিল্যান্ডের পেসার ট্রেন্ট বোল্ট।
আরেক কিউই পেসার টিম সাউদি পঞ্চম ওভারের প্রথম দুই বলে কোয়েটজার এবং প্রেস্টন মমসেনের উইকেট তুলে নিলে স্কটিশদের স্কোর দাঁড়ায় চার উইকেটে ১২।
ম্যাট মাচান ও বেরিংটনের লড়াই
পুরো ম্যাচে স্কটিশদের কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছিলেন ম্যাট মাচান ও বেরিংটন। এ দুই ব্যাটসম্যান পঞ্চম উইকেটে ৯৭ রান যোগ করে স্কটল্যান্ডকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনেন। সাত চার এবং এক ছক্কায় ৭৯ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলে কোরি অ্যান্ডারসনকে তুলে মারতে গিয়ে ব্র্যান্ডন ম্যাককালামের তালুবন্দি হন ম্যাট মাচান।
এক ওভার পরেই কোরি অ্যান্ডারসনের আরেকটি শট বল মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে মিলনির হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন বেরিংটন। এরপর ৩৪তম ওভারে অ্যান্ডারসনের দুই বলে কট বিহাইন্ড হলে স্কটল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় সাত উইকেটে ১২৯ রান।
স্কটিশ ইনিংসের লেজ মুড়ে দেন ভেট্টরি
স্কটিশ শেষ তিন ব্যাটসম্যানের উইকেট তুলে নেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার ড্যানিয়েল ভেট্টরি। বাঁহাতি এ স্পিনারের ঘূর্ণিতে ১৩ রানেই শেষ তিন উইকেট হারায় স্কটল্যান্ড।
সহজ জয়, এলো না সহজে
১৪৩ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বেগ পাওয়ার কথা ছিল না স্বাগতিকদের। শুরু থেকেই মারমুখি ভঙ্গিতে ব্যাট চালাতে থাকেন দুই ওপেনার ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম এবং মার্টিন গাপটিল। তবে দলীয় ১৮ রানের মাথায় গাপটিল আউট হলে প্রথম উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। এরপর ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম ১৫ রান করে দলীয় ৪৮ রানের মাথায় আউট হলে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে। দলীয় ৬৩ রানের মাথায় আউট হন রস টেইলর।
স্কটিশ বোলারদের লড়াই ও কিছু রানের জন্য আক্ষেপ
কেন উইলিয়ামসন এবং গ্র্যান্ট এলিয়ট চতুর্থ উইকেটে ৪০ রান যোগ করে সহজ জয়ের ইঙ্গিত দিলেও স্কটিশ বোলাররা লড়াই করেছেন। দলীয় ১০৬ রানের মাথায় উইলিয়ামসন ৩৮ রান করেই আউট হওয়ার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় কিউরা। এক পর্যায়ে নিউজিল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় সাত উইকেটে ১৩৭ রান।
এতে স্কটিশ বোলাররা আক্ষেপ করতেই পারেন, আর কিছু রান হলে হয়তো বিশ্বকাপের দ্বিতীয় অঘটন ঘটিয়ে দিতেই পারতেন তারা।