জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাবলুর মৃত্যুতে জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিবের শূন্যপদে কে আসবেন তা নিয়ে দলটির নেতাদের মধ্যে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। দলের কো-চেয়ারম্যানদের অনেকেই মহাসচিবের দায়িত্ব নিতে চান। এ নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন দলের কেউ কেউ। তারা বলছেন, এই পরিস্থিতি ঠিকমতো মোকাবিলা করতে না পারলে চ্যালেঞ্জে পড়বে জাপা। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করতে মানা করেছেন। তিনি বলেন, একজন প্রিয় রাজনৈতিক সহযোদ্ধা, দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাবলুকে আমরা হারিয়েছি। এ শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই ওই পদ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টির কিছু আছে বলে আমি মনে করি না। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, এ বিষয়ে ধীরেসুস্থে, ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেব। কারও হতাশ হওয়ার কিছু নেই। দলের
কথা চিন্তা করে অপেক্ষাকৃত গ্রহণযোগ্য মানুষটিকেই এই পদে নেওয়া হবে। গত ২ অক্টোবর করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান বাবলু। তার জন্য তিন দিনের শোক ঘোষণা করে দলটি। এর মধ্যেই মহাসচিব পদ পেতে তোড়জোড় শুরু করেন দলের অন্তত ছয়জন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের
নেতা। হুটহাট কাউকে মহাসচিব বানালে দলের ভেতর বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে বলে দলের চেয়ারম্যানকে সতর্ক করেন তারা। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কাকে মহাসচিব বানাবেন এর একক এখতিয়ার দলের চেয়ারম্যানের।
এদিকে জাপার অতিরিক্ত মহাসচিব গাইবান্ধা-১ আসনের এমপি শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করা হতে পারে এমন উড়োখবরে দলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাকে ঠেকাতে জাপার কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদের কলাবাগানের অফিসে গত সোমবার বৈঠক করেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। বৈঠকে ছিলেন কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, মজিবুল হক চুন্নু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, অতিরিক্ত মহাসচিব সাহিদুর রহমান ও লিয়াকত হোসেন খোকা। টেলিফোনে যুক্ত হন বিদেশে অবস্থান করা জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তাদের প্রত্যেকেই মহাসচিব পদপ্রত্যাশী।
জানা গেছে, জাপা মহাসচিব পদে আগ্রহী এমন অন্তত তিন নেতার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, মনোনয়ন বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ আছে। এ ছাড়া অনিয়মের সূত্র ধরে কোনো কোনো নেতাকে একাধিকবার দুদকেও তলব করা হয়েছে। অনিয়মে অভিযুক্ত এসব নেতার পদপ্রত্যাশা পূরণ না-ও হতে পারে।
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর দলটির চেয়ারম্যান পদ নিয়ে সংকট দেখা দিয়েছিল। এর পর এরশাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জিএম কাদের দলের দায়িত্ব নেন। পরবর্তী সময় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দলের চেয়ারম্যান হন তিনি। এর পর প্রায় আড়াই বছর চলে গেলেও বড় কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়নি তাকে।