সিরিয়াল দেখে কৌশল রপ্ত পরে এটিএম বুথে হানা

Slider টপ নিউজ


এটিএম মেশিনের লক ভেঙে ২৪ লক্ষাধিক টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ডাকাত চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে রাজধানী ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবি উত্তরের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- চক্রের মূলহোতা মো. শামীম আহাম্মেদ, নূর মোহাম্মদ সেবুল এবং মো. আব্দুল হালিম। তাদের মধ্যে শামীম আহাম্মেদ দীর্ঘদিন ওমানপ্রবাসী ছিল। নূর মোহাম্মদ আগে দর্জির কাজ করতো। এ ছাড়া আব্দুল হালিম চায়ের দোকানদার ছিল। এ সময় তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত নগদ ১০ লাখ আট হাজার টাকা, দুটি মোবাইল ফোন, একটি ছুরি, একটি প্লাস ও মাথায় ব্যবহৃত তিনটি কাপড়ের টুকরা জব্দ করা হয়।

যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, গত ১২ই সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ৩টার দিকে ডাকাতদলের সদস্যরা সিলেটের ওসমানীনগর থানার শেরপুর নতুন বাজারে যায়। এসময় বাজারের হাজী ইউনুস উল্ল্যাহ মার্কেটের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) নিচতলায় থাকা এটিএম বুথের দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ডকে মারপিট করে তারা। এক পর্যায়ে তার হাত ও মুখ স্কচটেপ পেঁচিয়ে বেঁধে ফেলে। ভারতীয় মেগা সিরিয়াল সিআইডি দেখে ব্যাংকের বুথের সিসি ক্যামেরায় কালো স্প্রে মেরে ক্যামেরা ঝাপসা করে বুথের লক ভেঙে দেয়। যাতে ডাকাতদের চেহারা সিসি ক্যামেরায় দেখা না যায়। পরবর্তীতে তারা শাবল দিয়ে এটিএম বুথের লক ও বক্স ভেঙে ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। ২৪ লাখ টাকার মধ্যে ১৪ লাখ টাকা জুয়া খেলে উড়িয়ে দেয় চক্রটি। এই ঘটনার পর ওই দিন সকালে সিলেটের ওসমানী নগর থানায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ একটি মামলা করেন। উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলামের নেতৃত্বে মামলার তদন্তের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

তিনি বলেন, ডাকাত চক্রের সদস্যরা তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে অনেক বেশি পারদর্শী। এটিএম বুথের এটিএম মেশিন ভেঙে টাকা লুটের মূল পরিকল্পনাকারী মো. শামীম আহাম্মেদ নিয়মিত ভারতীয় মেগা সিরিয়াল সিআইডি অনুষ্ঠানটি দেখতো। ওই সিরিয়াল দেখে এটিএম বুথের এটিএম মেশিন ভাঙার কলাকৌশল রপ্ত করে ও টাকা লুটের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরিকল্পনা মোতাবেক তার সহযোগী গ্রেপ্তার নূর মোহাম্মদ সেবুল ও আব্দুল হালিমদের সঙ্গে এ বিষয়ে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তারা মুখে মাস্ক, মাথায় গোলাপি রঙের কাপড় বেঁধে ও মাথায় ক্যাপ পরে শাবল ও অন্যান্য যন্ত্রপাতিসহ ইউসিবি’র ওই এটিএম বুথে প্রবেশ করে। এটিএম বুথের সিসি ক্যামেরায় তাদের চেহারা যেন না দেখা যায় সেজন্য কালো রঙের স্প্রে করে ক্যামেরার লেন্স ঝাপসা করে দেয় তারা। পলাতক একজনসহ এ চক্রের অন্য সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *