রোববার বিকালে ঢাকা মহানগর জেলা ও দায়রা জজ এর বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস এর আদালতে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের কারাবন্দী ২০ নেতাকর্মীর জামিনের শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। এসময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্যে কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হক নূর।
আসামিদের পক্ষে মামলা শুনানি করেন ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি এডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, এডভোকেট এমাদুল বশীর, এডভোকেট খাদেমুল ইসলাম।
এসময় জামিন শুনানীতে আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলতে চাইলে আদালত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে কথা বলার অনুমতি দেন। শুনানী শেষে আদালতের বাইরে আসলে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কাছে সাংবাদিকরা তার কোর্টে দেয়া বক্তব্যের বিষয় জানতে চান।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের জামিন শুনানীতে আমার কোর্টে থাকার কথা ছিল এবং আমি ছিলাম। হ্যাঁ আমি কথা বলার সুযোগ পেয়েছি কারণ আমি সেখানে বসে ছিলাম। বিচারক বলেছিলেন আমি পার্টি কিনা। উনাদের একটা অভ্যাস ল’ইয়ার ছাড়া কাউকে কথা বলার সুযোগ দেয়না। তবে আমি নাগরিক হিসেবে জজ সাহেবের কাছে দুই মিনিট কথা বলার সুযোগ চাই। তারা আমাকে সুযোগ দিয়েছেন।
জজ সাহেব প্রথম বলার চেষ্টা করেছেন উনিতো পাটি না মানে কি? তখন আমি বলি, ছাত্রদের এতবড় ইস্যু আমি অবশ্যই পাটি। আমি একজন নাগরিক হিসেবে ২ মিনিট কথা বলতে চাই। প্রথম কথাটা যেটা বললাম মাননীয় বিচারপতি এই ছাত্রদের কি অপরাধ? তারা তো আপনার কোর্টের ভিতরে কোন স্লোগান দেয়নি, সেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম। মাঠে ময়দানে তারা স্লোগান দিতেই পারে। তাদের হাতে কোন লাঠি ছিল না অতএব তারা পুলিশের উপর কোন হামলা করতে পারে না। এটা পুলিশের মিথ্যাচার। আজকে কথা বলা আমাদের নাগরিক অধিকার তারা সেটাই করেছে । তাই আপনি সবকিছু বিবেচনা করে দেখেন এদের কি বিচার হওয়া উচিত ।
দ্বিতীয় কথা, মাননীয় বিচারক আপনাকে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই কারণ আপনাকে দেখে আমার বঙ্গবন্ধুর কথা মনে পড়ে যায়। বঙ্গবন্ধুর যখন এই ধরনের মামলায় লোয়ার কোর্টে শাস্তি হতো তখন বঙ্গবন্ধু ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে যেতেন এবং বিচারক সাহেব তাকে বেল দিয়ে দিতেন। আপনারও সেটাই করা উচিত।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন,আইনের শাসনের সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি, আমার কথা রাখতে পেরেছি। বিচারকের দায়িত্ব আমায় কথা বলতে দেয়া। তিনি কথা বলতে দিয়েছেন এবং শুনেছেন, বাকী কি করবেন জানিনা।
এসময় তিনি আরো বলেন, ছাত্ররা শ্লোগান দিয়েছে বা গালি দেয়ায় ৬ মাস জেলে থাকতে হবে? এটা কি বিচার, এ জাতীয় বিচার ব্যবস্থা জঙ্গীবাদ। এসময় পাশে থাকা আইনজীবী বলেন ২০ জনেরই জামিন মঞ্জুর করেছেন।
গত ২৫ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগমন উপলক্ষে ছাত্র অধিকার পরিষদের ৫৬ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠায় মতিঝিল থানা পুলিশ । ইতিমধ্যে দীর্ঘদিন জেল খেটে অনেকে জামিন পেলেও আদালত উক্ত ২০ জনের বার বার জামিন নামঞ্জুর করেন। তারা গত ৬ মাস থেকে জেলে আছে।