আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিরাট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। কোনো কোনো সূত্র এটিকে একটি রকেট হামলা বলে বর্ণনা করছে। তবে কাবুলের পুলিশ প্রধান রশিদ জানিয়েছেন, বিমানবন্দরে উত্তর–পশ্চিম দিকে রকেট হামলায় এক শিশু নিহত হয়েছে। আল জাজিরা খবরটি নিশ্চিত করেছে।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সেখান থেকে ধোঁয়া উঠছে আকাশে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, সেখানে একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে কিভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে, তা পরিস্কার নয়।
বিবিসির সাংবাদিক সেকান্দার কেরমানি বলছেন, তার একটি সূত্র তাকে জানিয়েছে, এটি হয়তো একটি রকেট হামলা ছিল এবং এই রকেট বিমানবন্দরের কাছে একটি বাড়িতে আঘাত করেছে, বিমানবন্দরে নয়। কোনো হতাহতের খবর এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
এদিকে রয়টার্স বার্তা সংস্থা খবর দিচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র আজ কাবুলে একটি সামরিক হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় টার্গেট করা হয়েছিল আইএসের আফগান শাখার সদস্যদের। মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে রয়টার্স এই খবর দিচ্ছে। তবে এর বিস্তারিত আর কিছু জানানো হয়নি।
বিমানবন্দরের কাছে শোনা বিস্ফোরণের সাথে এই মার্কিন হামলার কোনো সম্পর্ক আছে কীনা সেটাও পরিস্কার নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, বিমানবন্দরে আবারো হয়তো হামলা হতে পারে এবং আজ রোববারই এরকম হামলার আশংকা বেশি বলে তিনি জানিয়েছিলেন। মার্কিন সরকার তাদের নাগরিকদের বিমানবন্দরে না যেতে হুঁশিয়ার করে দিয়েছিল।
কাবুলে এখন আর খুব বেশি বিদেশি সাংবাদিক নেই। তবে আল জাজিরার একজন সাংবাদিক, সেখান থেকে তার এক রিপোর্টে বলছেন, আজ সকালে তিনি কাবুল বিমানবন্দরে একটি মার্কিন বিমানও দেখেননি।
ন্যাটোর অন্যসব দেশ এরই মধ্যে তাদের উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করে চলে এসেছে। সর্বশেষ ব্রিটেনের উদ্ধার ফ্লাইটগুলো গতকাল কাবুল ছেড়েছে। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতও আফগানিস্তান ছেড়েছেন।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, তারা শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাবে, অর্থাৎ ৩১শে অগাস্টের মধ্যে সৈন্য প্রত্যাহারের যে সময়সীমা বেঁধে দেয়া আছে, সেপর্যন্ত।
রয়টার্স বার্তা সংস্থা একজন পশ্চিমা নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলছে, এই অভিযান কখন শেষ হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি, তবে এখনো এক হাজারের মতো বেসামরিক নাগরিক বিমানবন্দরে আছে সেখান থেকে ফ্লাইট ধরার আশায়।
এদিকে তালেবান বলছে, ৩১ অগাস্টের পর বিমানবন্দরের দায়িত্ব নেয়ার জন্য তারা পুরোপুরি প্রস্তুত।
নতুন সরকার গঠনের প্রস্তুতি
এদিকে আফগানিস্তানে সবার অংশগ্রহনের ভিত্তিতে যে সরকার গঠনের কথা তালেবান দিয়েছিল, সেই আলোচনা কোন পর্যায়ে আছে, সে সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যাচ্ছে না। দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে তালেবান কাবুলে ঢুকেছে, কিন্তু এখনো দেশটিতে কার্যত কোন সরকার নেই।
তালেবানের একজন মুখপাত্র টেলিভিশনে এক ভাষণে বলেছেন, তারা যে সরকার গঠনের আলোচনা চালাচ্ছেন, সেটা সবাইকে নিয়েই করা হবে এবং শিগগিরই আলোচনা একটা উপসংহারে পৌছাবে ।
তবে রোববার তালেবান উচ্চশিক্ষা বিষয়ক একজন অস্থায়ী মন্ত্রী নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। এর আগেও এরকম কিছু মন্ত্রী নিয়োগের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। তালেবান আফগানিস্তানের সব বাণিজ্যিক ব্যাংক খোলারও নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু বলেছে, লোকজন সপ্তাহে সর্বোচ্চ দুশত ডলার পর্যন্ত ব্যাংক থেকে তুলতে পারবে।