সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের হাতে যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতাকারী আফগানদের আতঙ্ক ও জীবননাশের হুমকিতে ফেলে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, এ কারণে তিনি কি ভবিষ্যতে অভিশংসনের মুখে পড়তে পারেন? ফক্স নিউজ, প্রথম থেকেই প্রকাশ্যে যে গণমাধ্যম ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করে আসছে, তেমনি প্রশ্ন তুলেছে। গণমাধ্যমটির জনপ্রিয় সাংবাদিক জেস ওয়াটারস মনে করেন, কাবুলের প্রধান বিমানবন্দরে যে সম্ভাব্য জিম্মি দশার পরিস্থিতি বাইডেন সৃষ্টি করেছেন, এ কারণে এ ডেমোক্র্যাট নেতাকে অভিশংসনের মুখে পড়তে হবে।
কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে বৃহস্পতিবার জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস-কের জোড়া হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ সেনাও রয়েছেন। এ ছাড়া ওই হামলায় অন্তত ১৫ মার্কিন সেনা আহত হয়েছেন। এর পর বিশেষ করে বিরোধী রিপাবলিকান দলের নেতারা বাইডেনের পদত্যাগ নয়তো অভিশংসন দাবি করছেন। এদিকে, ফক্স নিউজের ‘দ্য ফাইভ’-এর উপস্থাপক ওয়াটারস বলেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জঙ্গিদের নিধন করেছেন, আর বাইডেন সেই জঙ্গিদের আজ্ঞা পালন করছেন। এক সপ্তাহ আগে, কাবুল বিশৃঙ্খলার প্রসঙ্গ টেনে ট্রাম্পও বলেছিলেন, বাইডেনের উচিত পদত্যাগ করা।
৩৪ প্রদেশের দুই তৃতীয়াংশের বেশি একে একে দখল করে ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুলও কব্জা করে তালেবান। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ তালেবান প্রথম দফায় তাদের দুঃশাসন চালায়। তালেবানের সঙ্গে শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন স্বয়ং ট্রাম্প। কিন্তু বিরোধীমনা হওয়া সত্তেও প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্ষমতায় এসে ট্রাম্পের সেই নীতিতেই অনড় থাকেন। দোহা চুক্তি মেনে তিনি প্রথমে বলেছিলেন, ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে তালেবান-সমর্থিত আল কায়েদার হামলার বিশ বছর পূর্তির আগেই সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেবে ওয়াশিংটন। পরে তিনি জানান, ৩১ আগস্টের মধ্যেই সেনাদের ঘরে ফিরিয়ে নিতে চান তিনি।
আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে বাইডেনের ভ‚মিকা নিজ দল ও বিরোধী শিবির উভয় পক্ষ থেকেই সমালোচনার শিকার হচ্ছে। গ্যালাপের নিয়মিত জরিপ ঘেঁটে দেখা গেছে, চলতি বছর ২০ জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ডেমোক্র্যাট নেতা বাইডেনের জনপ্রিয়তা সর্বোচ্চ ৫৭ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ওঠানামা করছিল। কিন্তু তালেবানের নব-উত্থানের পর তা আরেকধাপ কমে গেছে, যা তার মেয়াদকালে সর্বনিম্ন। তবে, বাইডেন মনে করেন, তিনি কোনো ভুল করেননি।
কাবুলে আইএসের জোড়া হামলার পর মিজৌরির রিপাবলিকান সিনেটর জস হাউলি বলেছেন, এ ঘটনার জন্য বাইডেন দায়ী। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, বাইডেনের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা বা ইচ্ছা কোনোটাই নেই। তার অবশ্যই পদত্যাগ করা উচিত।