দিনাজপুর: দিনাজপুরের চিরিরবন্দর থেকে মা ও ছেলেকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় রংপুর সিআইডির এএসপিসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার সময় তাদেরকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে দিনাজপুর সদর উপজেলার ১০ মাইল মোড় থেকে তাদের আটক করে দিনাজপুর পুলিশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী লুৎফর রহমানের ভাই খলিলুর রহমান বাদি হয়ে চিরিরবন্দর থানায় অপহরণ মামলা করেন। সেই মামলায় আটককৃতদের গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার বিকেলে দিনাজপুর আদালতে নেয়া হয়।
দিনাজপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৪ এর বিচারক শিশির কুমার বসু তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। চিরিরবন্দর থানার ওসি সুব্রত কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতার পাঁচজন হলেন- রংপুর সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবির সোহাগ, এএসআই হাসিনুর রহমান, কনস্টেবল আহসানুল হক, ফসিউল আলম পলাশ (পুলিশের সোর্স) ও হাবিবুল ইসলাম (ড্রাইভার)।
ওসি জানান, বুধবার করা অপহরণের মামলায় তাদের আটক করা হয়। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে সত্যতা মিললে চিরিরবন্দর থানায় মামলা দায়ের হয়। মামলাটি করেছেন চিরিরবন্দরের খলিলুর রহমান। অপহরণ হওয়া নারী তার ভাইয়ের স্ত্রী।
সদর উপজেলার হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বাঁশেরহাট থেকে গত মঙ্গলবার বিকেলে আটক করা হয়। আটককৃতদের দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নেয়া হলে বুধবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হয়।
খলিলুর বলেন, গত সোমবার সন্ধ্যায় তার ভাই লুৎফর রহমান স্থানীয় বাজারে যান। সে সময় বাড়িতে ছিলেন লুৎফর রহমানের স্ত্রী, ছেলে ও ছেলের বউ। বাদীর অভিযোগ, সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবিরের নেতৃত্বে একটি দল রাত সাড়ে ৯টায় ওই বাড়িতে যায়। তারা লুৎফর রহমানকে আটক করতে এসেছে বলে জানায়।
লুৎফর রহমানকে না পেয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। ঘরে থাকা টাকা ও স্বর্ণালংকারও তারা লুট করে।
এরপর লুৎফরের স্ত্রী জহুরা বেগম ও ছেলে মো. জাহাঙ্গীরকে মারধর করে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চলে যায়। এরই মধ্যে তাদের মোবাইল নম্বরে দফায় দফায় ফোন করে বলা হয়, জহুরা ও জাহাঙ্গীরকে মুক্তির বিনিময়ে ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে। বিষয়টি চিরিরবন্দর থানায় জানানো হয়।
এরপর থানার পুলিশের সাথে পরামর্শ করে মুক্তিপণের টাকা নিতে অপহরণকারীদের গত মঙ্গলবার বিকেলে দিনাজপুর সদর উপজেলার বাঁশেরহাটে আসতে বলা হয়। অপহরণকারীরা মঙ্গলবার বাঁশেরহাট এলাকায়আসলে চিরিরবন্দর থানার পুলিশ তাদের আটক করে। উদ্ধার করা হয় জহুরা ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরকেও।
রংপুর সিআইডির ভারপ্রাপ্ত এসপি আতাউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। চিরিরবন্দরে আটক ৫জন রংপুর সিআইডির সদস্য। তিনি বলেন, ‘সিআইডির এই সদস্যরা ২১ আগস্ট থেকে ১০ দিনের ছুটিতে ছিলেন। এ সময়ে তাদের কোনো অভিযোগ তদন্তে দিনাজপুর যাওয়ার কথা না। অনুমতি ছাড়া ভাড়া করা একটি গাড়ি নিয়ে সেখানে তারা গিয়েছিলেন। কেন তারা এ কাজ করেছেন তা আমি জানি না। আটক হওয়ার পর আমাকে জানানো হয়েছে।