মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ বুধবার জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১৯ হাজার আমেরিকান এবং স্বদেশ থেকে ছেড়ে যেতে আগ্রহী আফগানদের সরিয়ে নিয়েছে। তা সত্ত্বেও তালেবান-নিয়ন্ত্রিত দেশ থেকে পালানোর আশায় কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আরো ১০,০০০ মানুষ ভিড় করেছে।
গতকাল কাবুল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মোট ৯০টি সামরিক ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ছেড়েছে, প্রতি ৩৯ মিনিটে একটি করে। সব মিলিয়ে কয়েক সপ্তাহ আগে উদ্ধার তত্পরতা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৮৮,০০০ মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দৃশ্য উত্তেজনাপূর্ণ এবং বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কারবি বলেছেন, ৩১ আগস্ট, যা কিনা প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা থাকার শেষ দিন, তারপর সেখানে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ করা ‘আমেরিকার দায়িত্ব হবে না।’
কর্মকর্তারা বলেছেন যে তারা জানেন ‘অনেক হতাশ মানুষ আছেন, যারা দেশ থেকে চলে যেতে চায়।’
পেন্টাগন বলেছে, যে সমস্ত আফগান যারা গত দুই দশকে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানকে সমর্থন করেছিল এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য ভিসা পেয়েছিল এবং বিমানবন্দরে পৌঁছেছিল তাদের সরিয়ে আনা হবে। তবে তালেবানের তল্লাশি চৌকি পেরিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে অনেকেই পেছনে পড়ে যাতে পারে।
৩১ আগস্ট সময়সীমার আগেই আফগানিস্তান থেকে উদ্ধার কার্যক্রম সম্পন্ন করবে যুক্তরাষ্ট্র
হোয়াইট হাউজ বলেছে, সময় সীমার আগেই তার প্রশাসন আমেরিকান, আফগান এবং তৃতীয় রাষ্ট্রের নাগরিকদের উদ্ধার অভিযান সম্পন্ন করতে চায় যাতে করে আমেরিকান সৈন্য ও সামরিক সামগ্রী যথাসময়ে নিয়ে আসা যায়।
আফগানিস্তান থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার সময় সীমা বৃদ্ধি করার বিষয়ে অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক চাপ সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৩১ আগস্ট সময়সীমার মধ্যেই এই প্রত্যাহারকাজ সম্পন্ন করতে অটল রয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে বাইডেন হোয়াইট হাউজ থেকে বলেন,আমরা বর্তমানে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে যাতে করে ৩১ শে আগস্টের মধ্যে শেষ করতে পারি। যত তাড়াতাড়ি আমরা এটা সম্পন্ন করতে পারি, ততই ভালো। প্রতিদিনের অভিযান আমাদের সৈন্যদের জন্য নতুন ঝুঁকি নিয়ে আসছে। বাইডেন বলেন, ১৪ আগস্ট থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ৭০,৭০০ জনকে নিরাপদে সরে আসতে সহায়তা করেছে। তবে তিনি স্বীকার করেন যে সময়সীমার মধ্যেই এই তত্পরতা সম্পন্ন করার বিষয়টি নির্ভর করছে, তালেবান এসব লোকজনকে বিমান বন্দরে যেতে দিচ্ছে কিনা।
বাইডেন তার মন্তব্যে এ কথা বলেননি যে এই উদ্ধার ফ্লাইটের কার্যক্রম সময়সীমার আগেই সম্পন্ন করা হবে। তবে হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব জেন সাকি মঙ্গলবার সংবাদদাতাদের নিশ্চিত করেছেন যে সব কিছু গুটিয়ে ফেলার জন্য সময়ের প্রয়োজন রয়েছে। এই তত্পরতা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। তবে সাকি বলেন, কাবুলে আমেরিকান সৈন্যরা ক্রমবর্ধমানভাবে আইএসের হুমকির সম্মুখীন। তিনি মূলত খোরাসান নেটওয়ার্কের কথা বলেন যারা কিনা উগ্র ইসলামিক স্টেট গ্রুপের স্বঘোষিত শাখা এবং মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় সক্রিয় রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রেস সচিব জন কার্বি এ কথা নিশ্চিত করেন যে সময়সীমা শেষ হবার আগেই সা কিছু গুছিয়ে আনতে সামরিক বাহিনীর কিছু সময়ের প্রয়োজন পড়বে।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা