আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে তিনটি জেলা দখল করে নেয়ার দাবি করেছে তালেবান বিরোধীরা। পাঞ্জশির উপত্যকার কাছে এই তিনটি জেলার অবস্থান। সেখানে সরকারি বাহিনীর অবশিষ্ট অংশ ও অন্যান্য মিলিশিয়ারা একত্রিত হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল বিসমিল্লাহ মোহাম্মদী তালেবানদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। তিনি এক টুইটে বলেছেন, প্রতিবেশী বাগলান প্রদেশের দেহ সালেহ, বানো এবং পুল-হিসার জেলা তাদের নিয়ন্ত্রণে এখন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তালেবানদের হাতে রাজধানী কাবুলের পতনের পর থেকেই শোনা যাচ্ছিল দেশের বিভিন্ন স্থানে তালেবানদের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষ হচ্ছে। এতে বেশ কিছু তালেবান মারা যাওয়ারও খবর পাওয়া যায়।
তবে তালেবানদের কাছ থেকে কোনো এলাকা পুনরুদ্ধারের দাবি এর আগে কেউ করেনি। জেনারেল বিসমিল্লাহ মোহাম্মদ পরিষ্কার করেননি তাদের সঙ্গে কোন মিলিশিয়ারা যোগ দিয়েছে। স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল টোলো নিউজ পুলিশের এক কমান্ডারকে উদ্বৃত করে জানিয়েছে, বাগলানের বানো জেলা স্থানীয় এক মিলিশিয়া বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। সেখানে অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে তালেবানরা কোনো মন্তব্য করেনি।
পাঞ্জশিরে তালেবানদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ, সাবেক সোভিয়েতবিরোধী মুজাহিদিন কমান্ডার আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ। আহমেদ মাসুদের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা বলেছেন, সেনাবাহিনীর অবশিষ্ট অংশ, স্পেশাল ফোর্সেস ইউনিটের অবশিষ্ট অংশ এবং স্থানীয় মিলিশিয়া গ্রুপগুলো ওই উপত্যকায় একত্রিত হয়েছে। এতে তাদের যোদ্ধা সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৬ হাজার। তাদের কাছে আছে কয়েকটি হেলিকপ্টার ও সামরিক যান। সোভিয়েত ইউনিয়ন যেসব সাজোয়া যান ফেলে গিয়েছিল, তার কয়েকটি তারা মেরামত করে নিয়েছে।
তবে পাঞ্জশির এবং পূর্বাঞ্চলীয় শহরগুলোতে যে তালেবানবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে, তাদের মধ্যে দৃশ্যত কোনো যোগসূত্র নেই। এসব বিক্ষোভ থেকে আফগানিস্তানের লাল, সবুজ ও কালো রঙের পতাকা উড়ানো হয়েছে। এখনও তালেবানরা পাঞ্জশিরে প্রবেশের চেষ্টা করেনি। সেখানে এখনও ৩০ বছর আগের যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের ফেলে যাওয়া সামরিক যানের ধ্বংসাবশেষ এখানে ওখানে পড়ে আছে।