বড়দের জন্য ৩৩ হাজার কোটি টাকা নতুন ঋণ দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

Slider অর্থ ও বাণিজ্য


করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের চলতি মূলধন জোগান দেয়ার জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল সরকার। তিন বছরব্যাপী এ কর্মসূচির মেয়াদ ইতোমধ্যে এক বছর পার হয়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে নতুন করে ব্যাংকগুলোর জন্য কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে বৃহৎ ও সেবা খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য ৩৩ হাজার কোটি টাকা নতুন ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কোন ব্যাংক কী পরিমাণ ঋণ বিতরণ করবে তারও লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে। ইতোমধ্যে নতুন এ নির্দেশনার চিঠি ব্যাংকগুলোকে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে গত বছর করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে সরকার এপ্রিলে বৃহৎ ও সেবা খাত এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণ বিতরণের জন্য আলাদা আলাদা লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়। ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বাস্তবায়নের এক কর্মসূচির নীতিমালাও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দেয়া হয়েছিল। প্রথমে বুহৎ ও সেবা খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত বছর ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণ বিতরণের জন্য কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও তা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু বড় উদ্যোক্তাদের ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় শতভাগ অর্জন করা হয়। এর পরেও এ তহবিলের আকার দুই দফায় ১০ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। চলতি মূলধনের জন্য বিতরণ করা এ ঋণের মেয়াদ দেয়া হয় এক বছর।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে তিন বছর মেয়াদি এ প্রণোদনা কর্মসূচির মেয়াদ এক বছর পার হয়ে গেছে। ফলে নতুন অর্থবছরের জন্য নতুন লক্ষ্যমাত্রা বেধে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ইতোমধ্যে ক্ষুদ্র ও এসএমই ঋণ বিতরণের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। পাশাপাশি বৃহৎ ও সেবা খাতের উদ্যোক্তাদের মাঝে ঋণ বিতরণের জন্যও ৩৩ হাজার কোটি টাকার নতুন লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলোকে এ ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার চিঠি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পাঠানো হয়েছে। তবে, বৃহৎ ও সেবা খাতে প্রণোদনা কর্মসূচির এ ঋণ এখনো যেসব ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তা পাননি তাদেরকে এবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঋণ বিতরণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অভিযোগ এসেছে কিছু কিছু ব্যাংক কিছু প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাকে ঋণ বিতরণ করেনি। কোনো কোনো ব্যাংক কিছু উদ্যোক্তার বিপরীতে ঋণ মঞ্জুর করেছে, কিন্তু ছাড় করেনি। আবার বড় কিছু উদ্যোক্তা বেশি হারে ঋণ নিয়ে তা অপব্যবহার করার অভিযোগ আছে। এ কারণেই যারা ইতোমধ্যে এ ঋণ পাননি নতুন বছরে তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঋণ দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিদায়ী বছরে ব্যাংকগুলো যে পরিমাণ ঋণ বিতরণ করেছে তার সুদের ওপর সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ভর্তুকি দিচ্ছে। বৃহৎ ও সেবা খাতের ৪০ হাজার কোটি টাকার সাড়ে চার শতাংশ হিসাবে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা এবং ক্ষুদ্র ও এসএমই খাতে বিতরণকৃত ১৫ হাজার কোটি টাকার ৫ শতাংশ হিসাবে সাড়ে ৭০০ কোটি টাকাসহ মোট ২ হাজার ২৫০ কোটি টাকা সুদের ওপর ভর্তুকি দেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ব্যাংকগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে যাচাই-বাছাই করে তা পর্যায়ক্রমে ছাড় করা হচ্ছে বলে ওই সূত্র জানায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *