নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের মূল সমাজে অন্তর্ভুক্ত করা বা স্থায়ীভাবে রেখে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ প্রস্তাবকে অবাস্তব আখ্যায়িত করে তা নাকচ করেছে বাংলাদেশ।
সোমবার (২ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমরা যে রোহিঙ্গাদের রেখেছি, তারা আমাদের সংজ্ঞাতে শরণার্থী না। তারা হচ্ছে নির্যাতিত ও বাস্তুচ্যুত জনগণ, আমরা কিছুদিনের জন্য তাদেরকে এখানে আশ্রয় দিয়েছি। আমাদের অগ্রাধিকার ইস্যু হচ্ছে তারা ফিরে যাবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারও বলেছে, তাদেরকে নিয়ে যাবে। চার বছর হলো যায় নাই, তারা কিন্তু কখনো বলে নাই, নিবে না। সুতরাং, এরা সাময়িকভাবে আশ্রয় নেওয়া লোক। এখানে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। তারা শরণার্থী না।
শরণার্থীদের আশ্রয়দাতা দেশে অন্তর্ভুক্ত করাসহ একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাবসহ ’রিফিউজি পলিসি রিফর্ম ফ্রেমওয়ার্ক’ নামে ১৬টি দেশের শরণার্থী ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে বিশ্ব ব্যাংক।
বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা কার্যালয় থেকে ফ্রেমওয়ার্কের বিষয়ে মতামত চেয়ে জুনের ৩০ তারিখ অর্থমন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেদনে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, কাজ করা, চলাফেরা, জমি কেনা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে সম্পৃক্ত হওয়াসহ সব ধরনের আইনি অধিকার শরণার্থীদের দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এই রিপোর্টটা- যেহেতু প্রথমত এরা (রোহিঙ্গারা) শরণার্থী না- আমরা পুরোপুরি রিজেক্ট করেছি।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক যে প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছে, সেটি দীর্ঘমেয়াদি। আমরা এটার পক্ষে না। আমরা আমাদের বক্তব্য জানিয়েছি। বলেছি, আমরা এটা গ্রহণ করি না। আমরা নাকচ করার পর ওদের সঙ্গে একটা সমঝোতা হচ্ছে। যেগুলো আমরা অপছন্দ করি সেগুলো বাদ দিয়ে একটা চুক্তি করব। আমাদের যে ক্ষণস্থায়ী চিন্তাভাবনা, সেটা অনুযায়ী তারা রাজি হলে চুক্তি করব।’
বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাংলাদেশের জন্য একটা বাড়তি চাপ থাকবে বলেও মনে করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।